ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া ও ন্যাটোর মাঝে তুমুল উত্তেজনা চলছে। এর মাঝেই উত্তেজনা প্রশমনের আশাবাদ ব্যক্ত করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই সঙ্গে তিনি পরিস্থিতির অবনতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন অভিযোগ করেছেন, ওয়াশিংটন রাশিয়াকে কাবু করতে কিয়েভকে ‘হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে।
পুতিন আরও বলেছেন, ক্রেমলিনের নিরাপত্তা দাবির বিষয়ে ওয়াশিংটন ও ন্যাটোর প্রতিক্রিয়াগুলো যাচাই করে দেখেছে রাশিয়া।
আমার কাছে মনে হচ্ছে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো উদ্বেগ নেই। তাদের লক্ষ্য রাশিয়ার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা। ইউক্রেনকে লক্ষ্যে পৌঁছানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে তারা। আমি আশা করি, অবশ্যই আমরা একটি সমাধান খুঁজে পাব, যদিও তা এত সহজ হবে না।
রাশিয়া যখন ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে এবং বেলারুশের সঙ্গে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। ঠিক সেই সময় পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে হাঙ্গেরীয় প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান মস্কো সফর করছেন।
হাঙ্গেরীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা শেষে প্রেসিডেন্ট পুতিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি পরিষ্কার যে রাশিয়ার উদ্বেগের জায়গাগুলোকে উপেক্ষা করা হয়েছে।’
প্রেসিডেন্ট পুতিন বারবারই নিরাপত্তাসংক্রান্ত দাবির কথা উপস্থাপন করছেন। রাশিয়া ন্যাটোর আর বর্ধিতকরণ চায় না- এমনকি দেশটির সীমান্তের কাছাকাছি আক্রমণে সক্ষম ন্যাটো বাহিনীগুলো প্রত্যাহারের দাবিও জানান তিনি। ১৯৯৭ সালের পূর্বের সামরিক অবস্থানে ন্যাটোকে ফিরে যাওয়ার দাবিও জানান তিনি।
পুতিন আরও বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো উদ্বেগ নেই। তাদের লক্ষ্য রাশিয়ার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা। ইউক্রেনকে লক্ষ্যে পৌঁছানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে তারা। আমি আশা করি, অবশ্যই আমরা একটি সমাধান খুঁজে পাব, যদিও তা এত সহজ হবে না।’
ক্রেমলিনের ধারণা, যদি ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদ পায়, তাহলে ক্রিমিয়া ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করবে দেশটি।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপত্যকা দখলে নেয় রাশিয়া। শুরু হয় ইউক্রেন সেনাবাহিনীর সঙ্গে মস্কো মদতপুষ্ট বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে কমপক্ষে ১৪ হাজার মানুষ নিহত হন।
এদিকে ইউক্রেন সীমান্তে সেনা মোতায়েন নিয়ে রাশিয়াকে হুঁশিয়ার করেছে ন্যাটো। পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপে বাড়তি যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে তারা। ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাড়তি সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে।
ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেন্স স্টোলেনবার্গ এর আগে বলেছিলেন, ‘ন্যাটো সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। এমনকি ইউরোপের দক্ষিণ-পশ্চিমেও যুদ্ধসেনা মোতায়েন করার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।’