ভারত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮ থেকে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখতে পাবে। দেশটির জাতীয় বাজেটের একদিন আগে বার্ষিক অর্থনৈতিক সমীক্ষা এমন পূর্বাভাস দিয়েছে। এর আগে জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (এনএসও) ৯ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল।
ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সোমবার লোকসভায় এই অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ করেন। এতে সরকারের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের আগে অর্থনীতির অবস্থার বিবরণ দেয়া হয়েছে। সমীক্ষায় ২০২১-২২ অর্থবছরে অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রের অবস্থার পাশাপাশি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে নেয়া সংস্কারের বিবরণ দেয়া হয়েছে।
ভারতে বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৭ দশমিক ৩ শতাংশ পতন হয়েছে। সমীক্ষায় করোনা মহামারির কারণে আগামীতে অর্থনীতিতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না ধরে নিয়েই প্রবৃদ্ধির হার অনুমান করা হয়েছে।
বড় আকারের ভ্যাকসিন কভারেজ, সরবরাহ-সংযুক্ত সংস্কারের সুবিধা, নিয়ম সহজীকরণ, রপ্তানিতে দৃঢ় বৃদ্ধি এবং মূলধন ব্যয় বৃদ্ধির নমনীয়তা আর্থিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে।
ভারতে জাতীয় বাজেটের আগে সাধারণত দুই খণ্ডে অর্থনৈতিক সমীক্ষা করা হয়ে থাকে। তবে ডিসেম্বর থেকে সিইএ পদ শূন্য থাকায় এবার এক খণ্ডের অর্থনৈতিক পর্যালোচনা প্রস্তুত করা হয়েছে। এবারের সমীক্ষার থিম- ‘প্রক্রিয়া সংস্কার’।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ‘প্রক্রিয়ার সরলীকরণ এবং মসৃণকরণ কার্যক্রমের জন্য যেখানে সহায়ক বা নিয়ন্ত্রক হিসেবে সরকারের উপস্থিতি প্রয়োজন’ তা নিশ্চিত করা হবে। সমীক্ষাটি করপোরেটদের জন্য স্বেচ্ছায় ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার প্রক্রিয়ার সরলীকরণ এবং আন্তঃসীমান্ত ইনসলভেন্সি (দেউলিয়া) প্রক্রিয়াকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণসহ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার রূপরেখা দিয়েছে।
টেলিকম সেক্টরে ড্রোন নিয়মের সরলীকরণ এবং সংস্কার ও পেটেন্ট আবেদন পদ্ধতিতে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। যেখানে ২০২০ সালের করোনা মহামারির কয়েক মাস আগে প্রকাশিত সমীক্ষায় জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
২০২০ সালের মার্চের শেষের দিকে সংক্রমণ ঠেকাতে ভারত লকডাউনের পথে হাঁটায় বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সরকার ও রিজার্ভ ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নেয়।
অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের অর্থনীতির অবস্থা শক্তিশালী করতে সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কিত সমস্যাগুলোর ওপর দৃষ্টি দিতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।