বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিয়েতে মৃত বাবার ‘অবতার’ করবেন আশীর্বাদ

  •    
  • ২৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০১:৪৫

বর দিনেশ বলেন, ‘আমার শ্বশুর গত বছরের এপ্রিলে মারা গেছেন। তাই আমি তার থ্রিডি অবতার তৈরি করেছি; যা উনার মতো দেখতে। তিনি অনুষ্ঠানে আমাদের দুই জনকে আশীর্বাদ করবেন।’

তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের বাসিন্দা দিনেশ শিবকুমার পদ্মাবতী ও তার হবু স্ত্রী জনগানন্দিনী রামস্বামীর ইচ্ছা ধুমধাম করে নিজেদের বিয়ের আয়োজনটা সারবেন। কিন্তু করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে এমন আয়োজন একেবারেই নিষিদ্ধ। সর্বোচ্চ ১০০ জনকে আমন্ত্রণ করার অনুমতি আছে রাজ্য সরকারের।

তাই বলে স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে?

আগামী মাসের আয়োজন নিয়ে বিকল্প ভাবতে থাকেন দিনেশ- জনগানন্দিনী। এক পর্যায়ে মাথায় আসে, প্রযুক্তির সহায়তায় বাস্তবায়ন করবেন স্বপ্ন।

সিএনএন এর খবরে বলা হয়েছে, বিয়ের নিরাপদ ভেন্যু হিসেবে তারা বেছে নিয়েছেন এমন এক জায়গা, যেখানে প্রশাসন কিংবা করোনা, কারও হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। ভেন্যুটি হলো হালের আলোচিত ‘মেটাভার্স’। সেখানে তারা এক সঙ্গে দুই হাজার মানুষকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

মেটাভার্স এমন এক ভার্চুয়াল দুনিয়া যেখানে অগুমেন্টেড রিয়্যালিটি, নানা রকম অবতার, নানা কীর্তিকলাপ মিলেমিশে রয়েছে। ১৯৯২ সালে কল্পবিজ্ঞান লেখক নীল স্টিফেনসন প্রথম ‘মেটাভার্স’ শব্দটি ব্যবহার করেন তার ‘স্নো ক্র্যাশ’ উপন্যাসে। পরে অবশ্য অনেক সিনেমায় দেখা গেছে মেটাভার্স।

নিজেদের হ্যারি পটার ভক্ত দাবি করেন এই যুবক-যুবতী। তাই তো বিয়ের জন্য হগওয়ার্ট থিম বেছে নিয়েছেন তারা। হ্যারি পোর্টারের একটি সিরিজে হগওয়ার্ড নামের একটি স্কুলে মেটাভার্সের অবাক দুনিয়ার দেখা মিলেছিল।

২৪ বছরের বিজ্ঞানমনা দিনেশ ব্লকচেইন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো বিষয়গুলোতে আগ্রহী। মেটাভার্সে বিয়ের ভেন্যুকে হগওয়ার্ট থিমে সাজাবে স্টার্ট-আপ প্ল্যাটফর্ম ‘টার্ডিভার্স’। এ জন্য গুনতে হচ্ছে ১ লাখ ৫০ হাজার রুপি।

দিনেশ শিবকুমার পদ্মাবতী ও তার হবু স্ত্রী জনগানন্দিনী রামস্বামী। ছবি: দিনেশ

আমন্ত্রিতরা বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে মোবাইল ফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপ দিয়েই যুক্ত হতে পারবেন বিয়েতে। সবচেয়ে মজার বিষয় মেটাভার্সের কল্যাণে ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা কনে জনগানন্দিনীর প্রয়াত বাবাকেও দেখতে পাবেন।

জনগানন্দিনীর বাবার ভার্চুয়াল অবতার। ছবি: টার্ডিভার্স

দিনেশ বলেন, ‘আমার শ্বশুর গত বছরের এপ্রিলে মারা গেছেন। তাই আমি তার থ্রিডি অবতার তৈরি করেছি; যা উনার মতো দেখতে। তিনি অনুষ্ঠানে আমাদের দুই জনকে আশীর্বাদ করবেন।

‘মহামারির কারণে রিসিপশনে অনেক অতিথির সমাগম সশরীরে সম্ভব না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, ঠিক আছে, বিয়ে হোক মেটাভার্সেই।’

কোথায় হবে বিয়ে?

মেটাভার্সে রিসিপসন হলেও, মূল আয়োজন হবে তামিলনাড়ুর কৃষ্ণগিরি জেলায় জনগানন্দিনীর গ্রামের বাড়িতে। উপস্থিত থাকবেন ঘনিষ্ঠজনরা।

সেখানের আনুষ্ঠানিকতা শেষের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মেটাভার্সের মাধ্যমে অতিথিরা আয়োজনে যোগ দিতে পারবেন। ঘুরে দেখার সুযোগ পারেন হগওয়ার্ট থিমের ভেন্যুটি। শুধু তাই নয়, এ সময়ে ইচ্ছামত ভার্চুয়াল অবতার ও পোশাক ধারণ করতে পারবেন অতিথিরা।

মেটাভার্সে বিয়ের আয়োজন আগেও হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে। আমন্ত্রিতদের সশরীরের পাশাপাশি ভার্চুয়ালিও আয়োজন উপভোগের ব্যবস্থা রেখেছিলেন ওই আমেরিকান দম্পতি।

মেটাভার্স কী

বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিখাতে এখন সবচেয়ে আলোচিত শব্দ ‘মেটাভার্স’।

মেটাভার্স একটি ভার্চুয়াল বিশ্ব, যেখানে যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেকে যুক্ত করে, অন্তত তাত্ত্বিকভাবে, যেকোনো কাজই করতে পারবেন একজন ব্যক্তি।

দ্য ম্যাট্রিক্স, রেডি প্লেয়ার ওয়ান ও ট্রনের মতো বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রগুলোতে এমন ভার্চুয়াল বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে মানুষ।

ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গের মতে, মেটাভার্সের মাধ্যমে যোগাযোগ, উদ্ভাবনসহ সব ধরনের কাজ করতে পারবে মানুষ। আগামী কয়েক দশকের মধ্যে ১০০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছাবে এ প্রযুক্তি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মোবাইল ইন্টারনেটের উত্তরসূরী হতে যাচ্ছে মেটাভার্স।

এ বিভাগের আরো খবর