পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান করা নিয়ে জোর বিতর্ক দেখা দিয়েছে জনসাধারণে।
মঙ্গলবার তাকে এই সম্মানে ভূষিত করে কেন্দ্রে আসীন বিজেপি সরকার। সামাজিক ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এদিন ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে বুদ্ধদেবের বাড়িতে ফোন করে সম্মাননার কথা জানানো হয় ।
খবর জানার পরপর তা প্রত্যাখ্যান করেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিবৃতিতে জানান, ‘পদ্মভূষণ পুরস্কার নিয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাকে এ নিয়ে কেউ কিছু বলেনি। যদি আমাকে পদ্মভূষণ পুরস্কার দিয়ে থাকে তাহলে আমি তা প্রত্যাখ্যান করছি।’
বুদ্ধদেবের স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য জানান, বুদ্ধদেব শারীরিকভাবে দুর্বল হলেও, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আগের মতোই দৃঢ়চেতা এবং সবল। সেভাবেই তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব পদ্মভূষণ সম্মাননা ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত করার মধ্য দিয়ে চমকের রাজনীতি করতে চাইছে কেন্দ্র সরকার।’
সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করাকে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘পুরস্কার গ্রহণ করা না করা ওনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কিন্তু কমিউনিস্টরা বরাবরই দেশের পরম্পরা সংস্কৃতিকে অপমান করেন।’
জবাবে সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘দিলীপ বাবুরাই দেশের পরম্পরা সংস্কৃতি জানেন না। জানলে ব্রিটিশদের দালালি করতেন না। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করতেন না। দিলীপ বাবু যে সরকারের হয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তারাই তো দেশে বিভাজনের চেষ্টা করছে। এটাই কি দেশের পরম্পরা?’
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পদ্মভূষণ সম্মান প্রাপ্তির বিরোধিতা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, ‘সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের জমি-সন্ত্রাস করেছিলেন বুদ্ধবাবু। এই সম্মান দেয়ার অর্থ সন্ত্রাসে সিলমোহর দেয়া। এ ঘটনায় এটাই স্পষ্ট যে বিজেপি বামদের মদতপুষ্ট।’
তবে বুদ্ধদেবের পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যানকে স্বাগত জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। পদ্মভূষণ পাওয়া আরেক বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতাকে উদ্দেশ্য করে টুইটে তিনি লেখেন, সঠিক সিদ্ধান্ত। উনি গোলাম নয়, আজাদ থাকতে চান।
এর আগে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কিংবদন্তি কমিউনিস্ট নেতা ও পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু।