ডাকঘরে রেশন কার্ডের সঙ্গে মোবাইল নম্বর দিতে গেলেই কিনতে হবে গঙ্গাজল। এমনই নিয়ম বলে অভিযোগ উঠেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার গোস্বামী-মালিপাড়া গ্রামের ডাকঘরে।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার এই নিয়মের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভের পর হুগলি জেলার প্রধান ডাকঘর জানায়, গঙ্গাজল কেনা মোটেই বাধ্যতামূলক নয়।
গোস্বামী-মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় ডাকঘরে রেশন কার্ডের সঙ্গে মোবাইল নম্বর যুক্ত করা হচ্ছে। এ জন্য ডাকঘরকে ব্যক্তিপ্রতি দিতে হচ্ছে ৫০ টাকা। এই টাকার সঙ্গে আরও ৩০ টাকা দিয়ে ২৫০ মিলিলিটার গঙ্গাজলের বোতল কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।
তবে গঙ্গাজলের জন্য কোনো রসিদ দেয়া হচ্ছে না।
গঙ্গাজল না কেনায় এক যুবকের রেশন কার্ড আটকে রাখার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
এ অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা ডাকঘরের সামনে বিক্ষোভ করেন।
তবে ডাকঘরটির পোস্টমাস্টার অসীম চক্রবর্তী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই যুবক নিজেই রেশন কার্ড রেখে গিয়েছেন। দপ্তর থেকে বিক্রির জন্য গঙ্গাজল পাঠানো হয়েছে। আমরা সবাইকে ওই জল নিতে অনুরোধ করছি। কাউকে বাধ্য করা হচ্ছে না। তবে তার জন্য কোনো রসিদ দেয়া হচ্ছে না।’
তবে গ্রাহকদের সঙ্গে পোস্টমাস্টারের কথোপকথনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে এক গ্রাহকের উদ্দেশে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘৩০ টাকা না দিলে রেশন কার্ড দেব না। এই গঙ্গাজল নিতেই হবে। তুমি যা পারবে করে নাও।’
বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনকারী তৃণমূল নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যা বলছে, মানুষ তাই করছে। আমরা এভাবে টাকা নিয়ে গঙ্গাজল বিক্রির প্রতিবাদ করছি। আগামীতে আমরা আরও বড় আন্দোলন করব। এভাবে টাকা নেয়ার অর্থ একজন খেটে খাওয়া মানুষের থেকে টাকা কেড়ে নেওয়া।’
বিজেপির যুব মোর্চার হুগলি জেলার সভাপতি সুরেশ সাউ এ বিষয়ে বলেছেন, ‘তৃণমূল যা করছে তাতে মনে হচ্ছে ডাকঘর থেকে মদও পাওয়া যাবে। এটা হরিদ্বারের গঙ্গাজল। কাউকে নিতে জোর করা হচ্ছে না। বাধ্য করা হচ্ছে না। ওরা মুর্খের দল।’
হুগলি মুখ্য ডাকঘরের সহকারী সুপার গীতা বার্লা বলেন, ‘ডাকঘরে গঙ্গাজল পাওয়া যাচ্ছে। তবে কোনো গ্রাহক তা কিনতে বাধ্য, এমনটা কোথাও বলা হয়নি।’