সাগরের নিচের আগ্নেয়গিরি থেকে বড় ধরনের অগ্ন্যুৎপাতের পর সুনামি আঘাত হেনেছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্র টোঙ্গায়। সুনামি সতর্কতা জারি আছে ফিজিতে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
টোঙ্গায় সুনামি আঘাতের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিওতে দেখা যায়, সাগরের পানি শহরে ঢুকে পড়ছে। বেশ কিছু বাড়ি ও একটি চার্চের ভেতর দিয়ে পানি বয়ে যাচ্ছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সুনামিতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। আগ্নেয়গিরির ছাই এসে পড়েছে রাজধানী নুকু’আলোফায়। শহরটি আগ্নেয়গিরি থেকে ৬৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে হুঙ্গা-টোঙ্গা-হু্ঙ্গা হা’আপাই আগ্নেয়গিরি থেকে শনিবার অগ্নুৎপাত শুরু হয়। ৮ মিনিট চলে অগ্ন্যুৎপাত। শকওয়েভ ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরজুড়ে।
সঙ্গে সঙ্গে সুনামি সতর্কতা জারি হয় কাছের টোঙ্গা, ফিজি ও অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে। সতর্ক অবস্থায় নিউজিল্যান্ড সরকার।
টোঙ্গার বাসিন্দা মেরে টাউফা বলেন, ‘খাবারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক এ সময়ে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। আমার ভাই ভেবেছিল বোমা বিস্ফোরণ এটি। সবাই টেবিলের নিচে আশ্রয় নিই। আশপাশের বাড়ির লোকজনও তাই করেছে।
‘একসময় দেখি বাড়িতে পানি ঢুকছে। সবাই চিৎকার করছিল, নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিল।’
গ্যাস, ধোঁয়া ও ছাই অন্তত ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত ওপরে ওঠে বলে জানিয়েছে টোঙ্গার ভূতাত্ত্বিক বিভাগ।
ইউনিভার্সিটি অফ অকল্যান্ডের আগ্নেয়গিরিবিশারদ অধ্যাপক শেন ক্রোনিন বলেন, ‘গত ৩০ বছরের মধ্যে টোঙ্গায় সবচেয়ে বড় অগ্নুৎপাতের ঘটনা এটি। ধোঁয়া আর ছাইয়ে আকাশ ছেয়ে গিয়েছিল। ধারণা করছি, কয়েক সেন্টিমিটার হবে ছাইয়ের পুরুত্ব। সতর্কতা জারি হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া রাজ্যে।
৮০০ কিলোমিটার দূরের ফিজিতেও বিপদের আশংকা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় উপকূলীয় বাসিন্দাদের উঁচু স্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ফিজি সরকার। জারি হয়েছে সুনামি সতর্কতা।
নিউজিল্যান্ডের ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি নর্থ আইল্যান্ডের উত্তর ও পূর্বাঞ্চল উপকূলের বাসিন্দাদের অপ্রত্যাশিত ঢেউয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছে।