তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগান সরকার দেশটির নারীদের বোরকা পরতে উৎসাহ দিতে গাছে ও দেয়ালে ব্যানার ঝুলিয়েছে। এমনকি বোরকা না পরলে নারী যাত্রীদের গণপরিবহনে উঠতে না দিতেও চালকদের আহ্বান জানিয়েছে তারা। এবার তালেবান সরকারের নতুন এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন দেশটির নারীরা।
টোলো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান সরকারের পুণ্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বোরকা পরিধান করতে নারীদের উৎসাহিত করতে দেশটির বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার লাগানোর প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছিলেন আফগান নারীরা।
রাস্তায় জড়ো হওয়া আফগান নারীদের দাবি, বোরকা আফগান সংস্কৃতির অংশ নয়। তাই এর পক্ষে প্রচার চালালে বিদেশি সংস্কৃতির প্রচারই হয়।
প্রতিবাদে শামিল হওয়া শাবানা সাবদিজ নামের এক নারী বলেন, বোরকা আমাদের পর্দা নয়। বোরকা এ অঞ্চলে ব্রিটেন ও ইন্ডিয়া চাপিয়ে দিয়েছিল। আমি একজন নারী ও আমিই আমার মাহরাম।
মাহরাম বলতে একজন নারীর পুরুষ সঙ্গীকে বোঝায়। ঘর থেকে বের হতে হলে একজন নারীর বাধ্যতামূলক পুরুষ সঙ্গী থাকার নিয়মকে মাহরাম বলা হয়।
শাহলাহ আরিফি নামের আরেকজন প্রতিবাদকারী বলেন, ‘এই পদযাত্রায় আমরা আমাদের বর্তমান শাসকদের কাছে পড়াশোনা ও কাজ করার অধিকার চাই।’
এ ছাড়া জড়ো হওয়া নারীরা বলেন, নারীদের অধিকার ক্ষুণ্ন করে তালেবান সরকারের একের পর এক নেয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিশ্বসম্প্রদায় চুপ থাকতে পারে না।
আন্দোলনকারীরা এমন সময় আন্দোলন করছেন, যখন দেশটিতে নারীরা এখনও পুরোপুরি কাজে ও স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাননি।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সমাজকে পরিবর্তনের জন্য এই পোস্টারগুলো দেশব্যাপী টানানো হচ্ছে।
পুণ্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ সাদিক আকিফ বলেন, ‘নারীদের জন্য বোরকা আল্লাহ ও তার নবীর নির্দেশ। এটি শরিয়তের বিধান। আমরা ধমকের সুরে কাউকে হিজাব বা বোরকা পরতে বাধ্য করতে পারি না।’
তালেবান সরকারের দাবি, ধীরে ধীরে তাদের নেতৃত্বাধীন আফগান সরকার ইসলামি শরিয়াহর আলোকে নারীদের সব অধিকার প্রদান করবে।