প্রাণীজগতের কোনো প্রজাতি কি দুইবার বিলুপ্ত হতে পারে? সে কী করে সম্ভব? অথচ এই ঘটনাটিই ঘটেছে পাহাড়ি ছাগল হিসেবে পরিচিত বুকার্ডোর ক্ষেত্রে।
গল্পের শুরুটা ১৯৯৯ সালের। সে বছর বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয় পৃথিবীতে আর একটি মাত্র বুকার্ডো বেঁচে আছে। বিজ্ঞানিরা তার নাম রাখে সিলিয়া, শেষ বুকার্ডো হওয়ায় এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য আলবার্তো ফার্নান্দেজ নামের একজন বন্যপ্রাণী চিকিৎসক তার গলায় একটি রেডিও বেঁধে দেন।
এর ঠিক ৯ মাস পর ২০০০ সালের জানুয়ারিতে গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা যায়।
বুকার্ডোর মৃত্যুর পর তার শরীরের কোষ মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তরল নাইট্রোজেনে ডুবিয়ে সংরক্ষণ করা হয়।
পরবর্তী সময়ে জোশ ফ্লোচ নামের ফ্রাঙ্কো-স্প্যানিশ বিজ্ঞানীদের দল মরে যাওয়া বুকার্ডোকে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়।
এটা খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। প্রথম ক্লোন করা ভেড়া ডলিকে যেভাবে ক্লোন করা হয়েছিল। সেই কৌশলেই বিজ্ঞানীরা বুকার্ডো প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন।
তারা সিলিয়ার কোষ থেকে সংগ্রহ করা নিউক্লিয়াস সংগ্রহ করে ৫৭টি স্যারোগেট প্রজাতির ছাগলের মাতৃগর্ভের ভ্রূণে স্থাপন করে। যার মধ্যে কেবল ৭টি ছাগল গর্ভবতী হয়। এর মধ্যে ৬টি ছাগলের গর্ভপাত হয়। শুধু একটি ছাগল সেলিয়ার ক্লোনকে জন্ম দিতে সক্ষম হয়।
পৃথিবীতে আবারও ফিরে আসে বুকার্ডো প্রজাতির ছাগল। যা ছিল বিলুপ্ত কোনো প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় প্রথম সফলতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেলিয়ার ক্লোনটি মাত্র ১০ মিনিট বেঁচেছিল। পৃথিবীর একমাত্র প্রজাতি হিসেবে দুবার বিলুপ্ত হয় বুকার্ডো।
বিজ্ঞানীরা আবারও ২০১৩ সালে সিলিয়ার কোষগুলো পরীক্ষা করার জন্য তহবিল পেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে সেলিয়াকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেননি তারা।
বুকার্ডো স্পেনে পাইরেনিয়ান আইবেক্স বা পর্বত ছাগল নামে পরিচিত ছিল। দেশটির পাইরেনিয়ান পর্বতমালায় এদের দেখতে পাওয়া যেত।