একের পর এক স্থলমাইন ও বিস্ফোরক শনাক্ত করে জীবন বাঁচিয়েছে বহু মানুষের। বীরত্বের জন্য মিলেছে স্বর্ণপদকের মতো সম্মাননাও। কম্বোডিয়ার স্থলমাইন খোঁজা ‘বীর’ মাগাওয়া ৮ বছর বয়সে মারা গেছে।
এই মাগাওয়া কোনো মানুষ নয়, ইঁদুর। মাগাওয়ার ওজন ছিল ১ দশমিক ২ কেজি। লম্বায় ছিল ৭০ সেন্টিমিটার। বয়স হয়ে যাওয়ায় এটিকে মাইন খোঁজার দায়িত্ব থেকে বেশ কিছু আগে অবসরে পাঠানো হয়েছিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাগাওয়ার বাড়ি আফ্রিকার তাঞ্জানিয়ায়। তবে তার কর্মস্থল ছিল কম্বোডিয়ায়। কম্বোডিয়াজুড়ে মাটিতে পুঁতে রাখা লাখ লাখ মাইন শনাক্তের কাজে আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে নিয়ে আসা হয় মাগাওয়াকে। সেখানেই গত সপ্তাহের শেষের দিকে মাগাওয়ার মৃত্যু হয়।
দায়িত্বের পাঁচ বছরে শখানেকের বেশি স্থলমাইন ও বহু বিস্ফোরক শনাক্ত করে কম্বোডিয়ার জনগণের কাছে ‘বীর’ বনে যায় মাগাওয়া।
বেলজিয়ামে নিবন্ধিত তাঞ্জানিয়াভিত্তিক দাতব্য সংস্থা অ্যাপোপোতে প্রশিক্ষণ পায় ইঁদুরটি। কম্বোডিয়ায় মাইন সরানোর কাজে যুক্ত কম্বোডিয়ান মাইন অ্যাকশন সেন্টারের (সিএমএসি) হয়ে কাজ করত মাগাওয়া। বয়স হয়ে যাওয়ায় এটির চলাফেরার গতি ধীর হয়ে গিয়েছিল। এ জন্য গত বছরের জুনে মাগাওয়াকে অবসরে পাঠানো হয়।
মাগাওয়ার মৃত্যুর পর অ্যাপোপো শোক জানিয়ে বলেছে, ‘মাগাওয়ার মৃত্যুতে অ্যাপোপোর সবার মনই ভারাক্রান্ত। মানুষের জীবন বাঁচাতে সে যেসব কাজ করেছে তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
সংস্থাটি জানায়, মাগাওয়া একদম সুস্থ ছিল। গত সপ্তাহের বেশির ভাগ সময় সে খেলা করে কাটিয়েছে। সপ্তাহের শেষের দিকে সে চলাচল কমিয়ে দেয়। শেষ দিনগুলোতে খাওয়া কমে গিয়েছিল তার।
মানুষের প্রাণ বাঁচাতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ মাগাওয়া পিডিএসএ স্বর্ণপদক পায়। প্রাণীদের সাহসী কর্মকাণ্ডের জন্য এই স্বর্ণপদক দেয়া হয়ে থাকে। এ সম্মাননাকে বলা হয় প্রাণীদের জন্য জর্জ ক্রস পদক। সাহসিকতার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সর্বোচ্চ পদক জর্জ ক্রস।
অ্যাপোপোর ৭৭ বছরের ইতিহাসে মাগাওয়াই প্রথম প্রাণী, যে পিডিএসএ পদক পেয়েছে।