বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের বাণিজ্যিক মহাকাশ প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। প্রতিষ্ঠানটি মহাকাশে বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট, স্পেস স্টেশনে ক্রু ও কার্গো প্রেরণ করে থাকে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী স্যাটেলাইটনির্ভর ইন্টারনেট সেবা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের লো অরবিটাল স্যাটেলাইটও পাঠাচ্ছে তারা। সর্বশেষ নাসার চাঁদে পুনরায় মানুষ পাঠানোর প্রকল্প আর্টেমিসে যুক্ত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ইলন মাস্কের লক্ষ্য আরও বড়। তিনি মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠাতে চান।
জনপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন ওয়েব সিরিজ ‘দ্য এক্সপেন্স’-এর মতো মানুষও যাতে মহাকাশনির্ভর সভ্যতা গড়ে তুলতে পারে সেই লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন ইলন মাস্ক। তারই অংশ হিসেবে স্পেসএক্স তৈরি করেছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ রকেট স্টারশিপ।
মহাকাশ অভিযানের ব্যয় কমাতে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য রকেটশিপের কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু স্টারশিপের রকেট বুস্টার বেশ বড়। একে সঠিকভাবে ফিরিয়ে আনা কঠিন। এর রকেট বুস্টারটি স্বয়ংক্রিয় অবতরণ করবে না। এটিকে ধরে ফেলা হবে।
স্পেসএক্সের স্টারশিপ স্পেসএক্সের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প। প্রকল্পটি সফল হলে স্টারশিপ মানুষকে চাঁদে কিংবা এর থেকেও দূরে নিয়ে যেতে পারে। যদি ব্যর্থ কিংবা প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়, প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে।
এই প্রকল্প সফল হলে স্টারশিপের রকেট বুস্টারই হতে যাচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কোনও বস্তু যা কৃত্রিম উপায়ে ধরে ফেলা হবে।
সাধারণত রকেট উৎক্ষেপণের জন্য লঞ্চ টাওয়ারের দরকার হয়। স্টারশিপের টাওয়ার শুধু উৎক্ষেপণের জন্য নয়, এর থাকবে দুটি রোবটিক হাতও। তা স্টারশিপ উৎক্ষেপণ করে ফেরার পথে নিচে নামতে থাকা রকেট বুস্টারকে ধরে ফেলবে। তাই একে বলা হচ্ছে ‘লঞ্চ অ্যান্ড ক্যাচ টাওয়ার’।
স্টারশিপের বুস্টার ছোড়ার পর স্বচালিত হয়ে নামার প্রয়োজন হবে না। এটিকে ক্যাচ টাওয়ার ধরে ফেলবে। তাই ল্যান্ডিং-লেগ এতে রাখা হয়নি। ফলে বুস্টারের ওজন কমবে। উৎক্ষেপণের সময় জ্বালানি খরচও কমে যাবে। জ্বালানি লোড করে দ্রুত পরবর্তী স্টারশিপ ছোড়াও সহজ হবে।
এর আগে ইলন মাস্ক বলেন, ‘স্টারশিপ স্পেসএক্সের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প। প্রকল্পটি সফল হলে স্টারশিপ মানুষকে চাঁদে কিংবা এর থেকেও দূরে নিয়ে যেতে পারে। যদি ব্যর্থ কিংবা প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়, প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে।’
স্টারশিপ প্রকল্প একের পর এক চমক দেখিয়েই যাচ্ছে। মাস্ক দাবি করেছেন, এই রকেটে ব্যবহৃত ৩৩ র্যাপ্টর ইঞ্জিন এই পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট ইঞ্জিন। এবার তারা এমন এক টাওয়ার উন্মোচন করল যা শুধু স্পেসএক্সের রকেটকে ছুড়তেই সাহায্য করবে না, অবতরণের সময় একে ধরেও ফেলবে।