আফগানিস্তানে নারীদের হিজাব পরতে উদ্বুদ্ধ করতে গাছে ও দেয়ালে ব্যানার ঝুলিয়েছে ক্ষমতাসীন তালেবান।
দেশটির সদগুণ প্রচার এবং দুষ্কর্ম প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রণালয় স্থানীয় সময় রোববার রাজধানী কাবুলের বিভিন্ন স্থানে এই ব্যানার ঝুলিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আফগান সংবাদমাধ্যম খামা প্রেস।
হিজাব না পরলে নারী যাত্রীদের গণপরিবহনে উঠতে না দিতে চালকদের প্রতি আহ্বান জানানোর পর প্রচারণায় নতুন কৌশল প্রয়োগ করল তালেবান।
গাছে ও দেয়ালে সরকারের লাগানো ব্যানারে দুই ধরনের হিজাবের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। নারীর চোখ-মুখসহ পুরো শরীর ঢাকা দুই হিজাবের একটির রং কালো, অন্যটি নীল।
হিজাবের ছবি লাগানো ব্যানারে লেখা হয়েছে, ‘শরিয়া আইন অনুযায়ী একজন মুসলিম নারীকে অবশ্যই হিজাব পরতে হবে। এটা শরিয়ার বিধান।’
সদগুণ প্রচার এবং দুষ্কর্ম প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, হিজাব পরতে উদ্বুদ্ধ করতে এই ব্যানার টাঙানো হয়েছে। এ ব্যাপারে কাউকে জোর করার সুযোগ নেই।
এর আগে হিজাব ছাড়া কোনো নারীকে গণপরিবহনে বসতে না দিতে চালকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল তালেবান। নির্দিষ্ট দূরত্বে ভ্রমণে ইচ্ছুক কোনো নারীর সঙ্গে যদি ঘনিষ্ঠ পুরুষ স্বজন না থাকেন, তবে ওই নারী যানবাহনে উঠতে পারবেন না বলেও জানানো হয় তখন।
হিজাব ছাড়া নারীদের পরিবহন সেবা না দিতে আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাদেক আকিফ মুহাজির তখন বিবৃতিতে বলেন, ‘কোনো নারী ৪৫ মাইলের বেশি দূরত্বে ভ্রমণ করতে চাইলে তাকে পরিবারের পুরুষ সদস্যকে সঙ্গে নিতে হবে। এ ছাড়া তাদের পরিবহনে উঠতে দেয়া উচিত হবে না।’
তার আগে একই মন্ত্রণালয় টিভিতে নাটক প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। দেয়া হয় টিভিতে সংবাদ প্রচারের সময় নারীদের হিজাব পরার নির্দেশনাও।
একের পর এক শহর দখলের পর গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখলের মাধ্যমে আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণে নেয় তালেবান। ওই সময় প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
এরপর ৭ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তালেবান। একপর্যায়ে নারী মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে সদগুণ প্রচার এবং দুষ্কর্ম প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করে তারা। নারীদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ নিয়ে বরাবরই সমালোচানার মুখে আছে দেশটি।