কাজাখস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোকার্ট তোকায়েভ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে সন্ত্রাসীদের দেখামাত্রই গুলি করা হবে।’
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভাষণে বিক্ষোভকারীদের নির্বোধ উল্লেখ করছেন প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ। বলেছেন, অপরাধী ও খুনীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না।
‘আলোচনায় বসলে আমাদের সমঝোতা করতে হবে...অস্ত্রধারী ও প্রশিক্ষিত দস্যুদের সঙ্গে। তাদের অনেকে স্থানীয়, অনেকে আছেন বিদেশি। আসলে ওরা সন্ত্রাসী। তাই আলোচনা নয়, তাদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে। শিগগিরই এমনটা ঘটবে।’
জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিক্ষোভ শুরু হয় কাজাখস্তানে। পরে আরও কিছু দাবি আন্দোলনে যুক্ত হয়। একপর্যায়ে তা রূপ নেয় সহিংসতায়। বলা হচ্ছে, ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এমন পরিস্থিতি দেখেনি দেশটির জনগণ।
- আরও পড়ুন: উত্তপ্ত কাজাখস্তানে রুশ সেনা
বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী আসকার মামিন ও তার সরকার। দেশজুড়ে জারি হয় দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা।
কিন্তু তারপরও দমানো যাচ্ছে না বিক্ষুব্ধদের। বুধবার দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী আলমাতির কিছু সরকারি ভবন ও বিমানবন্দর দখলে নেয় বিক্ষোভকারীরা।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ জানান, আক্রান্ত হয়েছে আলমাতি। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে বলি হয়েছেন শহরের বাসিন্দারা। রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এর পরপর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশের সামরিক জোট কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) সহায়তা চান কাজাখস্তান প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার সেনারা নামে কাজাখস্তানে।
জানানো হয়, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনীর অংশ হিসেবে মস্কোর নেতৃত্বে এই বাহিনী দেশটির অবকাঠামো রক্ষায় কাজ করবে।
ইতোমধ্যে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে সিএসটিও জোট আলমাতি বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
আলমাতি শহরের বিভিন্ন স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। ছবি: এএফপি
সহিংসতা চলে বৃহস্পতিবারও। বিক্ষোভকারী, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ত্রিমুখী সংঘর্ষে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
কাজাখ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ২৬ বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর ১৮ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। আটক হয়েছেন অন্তত ৩ হাজার।