সময়ের সঙ্গে জটিল হয়ে উঠছে কাজাখস্তান পরিস্থিতি। কয়েক দিন ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে মধ্য এশিয়ার দেশটিতে প্যারাট্রুপার পাঠিয়েছে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনীর অংশ হিসেবে মস্কোর নেতৃত্বে এই বাহিনী দেশটির অবকাঠামো রক্ষায় কাজ করবে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশের সামরিক জোট কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) বরাতে এ খবর ছেপেছে দ্য গার্ডিয়ান।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসেম-জোমার্ট তোকায়েভ দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার সিএসটিওর হস্তক্ষেপ চান। রাশিয়ার নেতৃত্বে এই জোটে আছে আর্মেনিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান।
ঠিক কত সেনা পাঠানো হয়েছে তা নিশ্চিত না হলেও, ইন্টারফ্যাক্সকে রাশিয়ার এমপি লিওনিদ কালাসনিকোভ বলেন, ‘কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট যতদিন মনে করবেন আমাদের প্রয়োজন আছে, ততদিন সেনারা অবস্থান করবে। রাজনৈতিক অস্থিরতায় কাজাখস্তানের অবকাঠামো যেন ভেঙে না পড়ে, তা দেখভাল করবে এই জোট।’
কাজাখস্তানে অবতরণ করছে রুশ প্যারাট্রুপার। ছবি: বিবিসি
জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিক্ষোভ শুরু হয় কাজাখস্তানে। পরে আরও কিছু দাবি আন্দোলনে যুক্ত হয়। একপর্যায়ে তা রূপ নেয় সহিংসতায়। বলা হচ্ছে, ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এমন পরিস্থিতি দেখেনি দেশটির জনগণ।
বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী আসকার মামিন ও তার সরকার। দেশজুড়ে জারি হয় দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা।
কিন্তু তারপরও দমানো যাচ্ছে না বিক্ষুব্ধদের। বুধবার দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী আলমাতির কিছু সরকারি ভবন ও বিমানবন্দর দখলে নেয় বিক্ষোভকারীরা।
এদিন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ। জানান, আক্রান্ত হয়েছে আলমাতি। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে বলি হয়েছেন শহরের বাসিন্দারা। রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়া হবে।
- আরও পড়ুন: বিক্ষোভের মুখে কাজাখ সরকারের পতন
এর পরপর সিএসটিওর হস্তক্ষেপ চান প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ।
সহিংসতা চলে বৃহস্পতিবারও। বিক্ষোভকারী, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ত্রিমুখী সংঘর্ষে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
বিক্ষোভ দমাতে কঠোর অবস্থানে নিরাপত্তা বাহিনী। ছবি: বিবিসি
তারা বলছে, সহিংসতায় অবকাঠামো ধ্বংসের পাশাপাশি ৩৫৩ নিরাপত্তারক্ষীসহ বহু বেসামরিক মানুষ আহত হয়েছেন। মারা গেছেন অন্তত ১২ জন।
কাজাখ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সহিংসতায় এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর ৮ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।