ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনকালে ক্ষমতাসীন বিজেপি যেসব ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছে, এর অধিকাংশই ভুয়া।
সোমাবর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দিয়ে একথা জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)।
আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়ে সিবিআই জানায়, ২১টি ধর্ষণের অভিযোগের কোনো সারবত্তা নেই। মামলাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত এপ্রিল-মে মাসে বিধানসভার নির্বাচন ও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে মোট ৩৯টি ধর্ষণের মামলা করে বিজেপি ও অন্য দলগুলো। যার মধ্যে ২১টি মামলা বন্ধ হয়ে গেল। চারটি মামলা চলছে। বাকিগুলোর এখনও তদন্ত শুরু হয়নি।
সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কাছে হেরে বিজেপি অভিযোগ তোলে, সহিংসতায় অশান্ত পশ্চিমবঙ্গে তাদের কর্মীদের ওপর অত্যাচার করছে শাসক দল তৃণমূল। তাদের কর্মীদের ঘরছাড়া করা, মারধর করা, যৌন হেনস্থা, ধর্ষণ, গণধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে বলে শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলে বিজেপি। যদিও তৃণমূল তা অস্বীকার করে।
নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় একাধিক পিটিশন হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বিজেপির পক্ষ থেকে সিবিআইয়ের তদন্তের দাবি তোলা হয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখে কলকাতা হাইকোর্ট গত ১৮ জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়।
ওই কমিটি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে প্রতিবেদন তৈরি করে কলকাতা হাইকোর্টে জমা দিলে, প্রতিবেদন দেখে রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত। রাজ্যের পক্ষে কংগ্রেস নেতা আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে আদালতে দাবি করেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ করে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বে গঠিত বৃহত্তর বেঞ্চ খুন, গণধর্ষণ এবং ধর্ষণের মতো ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়। সে হিসেবে যৌন হেনস্থা, ধর্ষণের ২১টি মামলার তদন্তে নেমে অভিযোগের কোনো প্রমাণ পায়নি সিবিআই। এই ঘটনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিজেপি কোণঠাসা।