দুই বছর আগে ইরাকের বাগদাদে এক আমেরিকান ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছিলেন ইরানি রেভল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডার কাসেম সুলেইমানি। আমেরিকার তখনকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড হয়।
সোমবার সুলেইমানি হত্যার দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে দেয়া এক ভাষণে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্টের বিচার দাবি করেছে ইরান। আর তা না হলে দেশটি যে কোনো মূল্যে ট্রাম্পের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করেছে।
রাজধানী তেহরানের সবচেয়ে বড় মসজিদ থেকে দেয়া এক ভাষণে এমন অঙ্গীকারের কথা জানান ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।
রাইসি বলেন, `সোলেইমানির হত্যার জন্য দোষী আমেরিকার তখনকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, পরাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও ও অন্যদের ন্যায়বিচার এবং প্রতিশোধের মুখোমুখি হতে হবে।’
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোলেইমানি হত্যার দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে ইরানসহ দেশটির সমমনা মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর বিভিন্ন মসজিদে হাজার হাজার মানুষ শোক সমাবেশ করেছে।
এ ছাড়া এদিন সকালে ইরাকের বাগদাদে বিমানবন্দরে অবস্থান করা আমেরিকান সৈন্যদের উদ্দেশে গুলি ছুড়েছে দুটি ড্রোন। একটি ছবিতে দেখা গেছে, ড্রোন দুটির ডানার মধ্যে আরবিতে লেখা আছে, ‘সোলেইমানির প্রতিশোধ’।
এ ছাড়া দেশটির শত্রু দেশ হিসেবে গণ্য হওয়া ইসরায়েলের গণমাধ্যমও হ্যাক করা হয় দিনটিতে। হ্যাক হওয়ার পর জেরুজালেম পোস্টের হোমপেজে একটি ছবি দেখা যেতে শুরু করে। ছবিতে দেখা যায়, আংটি পরা একটি আঙুল থেকে ছুটে যাচ্ছে একটি মিসাইল। এ ধরনের একটি আংটি সোলেইমানির আঙুলে শোভা পেত।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের একজন কমান্ডার হলেও তিনি এই বাহিনীর বিশেষ শাখা ‘কুদস’ এর নেতৃত্ব দিতেন। অলিখিতভাবেই তার পদমর্যাদা ছিল দেশটির যেকোনো সামরিক কর্মকর্তার ওপরে।
প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে তিনি কুদস বাহিনীটি গড়ে তুলেছিলেন। ইরাক, লেবানন, ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে বাহিনীটির গভীর সংযোগ আছে।
তাই ইরানি এই সমরবিদ ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ও আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র লক্ষ্যবস্তু ছিলেন। সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড ইরানের সামরিক শক্তিতে অনেক বড় একটি আঘাত।