লকডাউনে খাদ্যসংকটে পড়ার কথা জানিয়েছেন চীনের জিয়ান শহরের বাসিন্দারা, তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, খাবারের পর্যাপ্ত জোগান রয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে জিয়ান শহরের প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে গত সপ্তাহ থেকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যান্য দেশে বিধিনিষেধের মধ্যে খাবার বা ওষুধ কেনার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারে, তবে চীনে তার বিপরীত। লকডাউনে স্থানীয়রা খাবার কিনতেও ঘরের বাইরে যেতে পারে না।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সরকার খাবার ও দরকারি অন্যান্য জিনিসপত্র নাগরিকদের ঘরে পৌঁছে দেয়।
অন্য সময়ে লকডাউনে খাদ্য বা অন্য সহায়তা পৌঁছানো নিয়ে চীনের নাগরিকদের কাছ থেকে অভিযোগ শোনা যায়নি, তবে সবশেষ লকডাউনে জিয়ান শহরের বাসিন্দারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ করেছেন, তারা কষ্টে আছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা আসছে না।
জিয়ানে শুরুতে লকডাউনের মধ্যেও প্রতি পরিবার থেকে একজনকে বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ। দুই দিনে একবার তারা খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনতে বের হতে পারত।
সোমবার থেকে কর্তৃপক্ষ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দেয়।
এ ধরনের বিধিনিষেধে কর্তৃপক্ষই খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী ঘরে পৌঁছে দেয়, তবে শহরের অনেক বাসিন্দার অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহায়তা পাচ্ছে না তারা। এতে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
এমন একজন চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েবোতে বলেন, ‘আমি শুনেছি অন্যান্য জেলার অনেকেই ধীরে ধীরে সাহায্য পাচ্ছে, কিন্তু আমি কিছুই পাইনি। কর্তৃপক্ষ আমাকে বের হতে নিষেধ করেছে।
‘আমি চার দিন আগে কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য অনলাইনে অর্ডার করি, কিন্তু এখন পর্যন্ত পণ্য পাওয়ার লক্ষণ দেখছি না।’
অন্য এক ব্যক্তি বলেন, ‘বরাদ্দ খুবই কম। আমাদের জেলার কেউই কিছু পায়নি। আমাদের বলা হয়েছে একসঙ্গে অর্ডার করতে। দ্রব্যের দামও অত্যধিক।’
অনেকেই জানাচ্ছেন, তাদের খাবার ফুরিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ ১৩ দিন ধরে ঘরে। খাদ্যসংকটে দিনযাপন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে জিয়ানের বাসিন্দাদের অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, খাবার নির্দিষ্ট কার্যালয়ে যাচ্ছে, তবে স্বেচ্ছাসেবী সংকটে নগরবাসীর ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে না।
করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীন হলেও শুরুতেই কঠোর লকডাউনের মাধ্যমে মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পূর্ব এশিয়ার পরাশক্তিটি, তবে সম্প্রতি আবারও দেশটির বিভিন্ন স্থানে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
চীনের সরকারি হিসাবে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছে ৪ হাজার ৬৩৬ জন।