ইউক্রেন সীমান্তে উত্তেজনা এখনও কমেনি। পশ্চিমা শক্তি ও রাশিয়া উভয় পক্ষই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে আবারও আলোচনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বাইডেন ও পুতিনের ফোনালাপ হয়। তারা ৫০ মিনিট ধরে কথা বলেন।
ফোনালাপে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর যেকোনো ধরনের অবরোধ দুই দেশের সম্পর্কে ভাঙন ধরাতে পারে।
বাইডেনও পুতিনকে পাল্টা অবরোধের হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যেকোনো সামরিক আগ্রাসনের জবাব দেবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে বাইডেনের সঙ্গে পুতিনের ফোনালাপের প্রস্তাব দেয়া হয়। ডিসেম্বরে এ দুই নেতার মধ্যে এটি ছিল দ্বিতীয় ফোনালাপ।
যুক্তরাষ্ট্র আগেই সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, যদি ইউক্রেনে কোনো ধরনের সামরিক আগ্রাসন হয়, এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি এমন অবরোধ রাশিয়াকে মোকাবিলা করতে হবে।
রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনার বিষয়টি অস্বীকার করে। ক্রেমলিনের দাবি, সেনারা সেখানে অনুশীলন করছে। নিজের দেশে অনুশীলন করার অধিকার রাশিয়ার রয়েছে।
দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি ইউকাশকভ জানান, পুতিন ফোনালাপে সন্তুষ্ট। এ ফোনালাপ ভবিষ্যতে আলোচনার ক্ষেত্রও প্রস্তুত করেছে।
ফোনালাপটি এমন সময় অনুষ্ঠিত হলো, যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন সীমান্তে ব্যাপক সেনা মোতায়েনের অভিযোগ করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে, রাশিয়া ১ লাখের বেশি সেনা ইউক্রেন সীমান্তে জড়ো করেছে।
ডিসেম্বরের শুরুতে পুতিনের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন জো বাইডেন। তিনি বলেন, ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটির ইউরোপীয় মিত্ররা উদ্বিগ্ন। ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে। রাশিয়ার সামরিক পন্থা বাদ দিয়ে কূটনৈতিক পন্থায় ফিরে আসা উচিত।
বাইডেন আগেই সতর্ক করে বলেছেন, যদি রাশিয়া ইউক্রেন দখল করে, তবে তাকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক অবরোধ দেয়ার পাশাপাশি অন্যান্য পদক্ষেপও বিবেচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে সেই বৈঠকে পুতিনও পাল্টা জবাব দেন। তিনি ইউক্রেনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। পাশাপাশি সীমান্তের পূর্বদিকে ন্যাটোর শক্তিমত্তা বৃদ্ধির বিষয়টিও তুলে ধরেন। ন্যাটোর সেনাদের প্রত্যাহারেরও দাবি জানান।
সীমান্তে রাশিয়ার এই যুদ্ধ প্রস্তুতি আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচনা করছে ন্যাটো।