ভারতের কানপুরে ব্যবসায়ী পীযূষ জৈনের বাড়িতে অভিযানের শুরুতে দেড় শ কোটি রুপি উদ্ধার করেন আয়কর কর্মকর্তারা। পরে আরও নগদ অর্থের সন্ধান ও গোনা শেষে দেখা গেল উদ্ধারকৃত অর্থের পরিমাণ ২৮৪ কোটি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩২৫ কোটি টাকারও বেশি।
এ ছাড়া দুবাইয়ে দুটি বিলাসবহুল বাড়িও আছে পীযূষের। মুম্বাই, কানপুর, দিল্লিসহ ভারতের নানা জায়গায় আরও বিপুল সম্পদ রয়েছে তার।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, ১২০ ঘণ্টার তল্লাশি শেষে কর ফাঁকির অভিযোগে সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে কানপুরের আলোচিত ব্যবসায়ী পীযূষ জৈনকে। এদিনই তাকে আদালতে তোলা হয়।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনো এক ব্যক্তির কাছ থেকে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি নগদ অর্থ উদ্ধার করল আয়কর দপ্তর।
এদিকে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী পীযূষকে নিয়ে ভারতে রাজনৈতিক অঙ্গনে দোষারোপের খেলা শুরু হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের অভিযোগ, পীযূষ সমাজবাদী পার্টির ঘনিষ্ঠ। সমাজবাদী পার্টির পাল্টা অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী যোগীর জমানায় সব ধরনের দুর্নীতি বেড়ে গেছে।
সরাসরি নাম উল্লেখ না করলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই দুষেছে ভারতীয় কংগ্রেস পার্টি। এক টুইটে দলটি লিখেছে, ‘উনি বলেছিলেন ৫০ দিন দাও। পাঁচ বছর কেটে গেছে। নোটবন্দি আসলে ছিল বিপর্যয়।’
আয়কর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া নগদ অর্থ ছাড়াও দেশে-বিদেশে পীযূষের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। এসবের মধ্যে কানপুর ও কনৌজে তার সাতটি সম্পত্তি রয়েছে। মুম্বাইয়ে দুটি বাড়ি, দিল্লিতে একটি এবং দুবাইয়ে দুটি বাড়ি রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তার কাছ থেকে কয়েক কেজি স্বর্ণও জব্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, মোট ১২০ ঘণ্টা ধরে তল্লাশির পর পীযূষকে ৫০ ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়। তারপর তাকে গ্রেপ্তার করা, তবে তল্লাশি শেষ হয়নি।
গত সপ্তাহে পীযূষের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। প্রথম দিন ১৫০ কোটি রুপির নোট উদ্ধার করে আয়কর বিভাগ। কানপুরের আয়কর বিভাগ যে ছবি প্রকাশ করে তাতে দেখা যায়, কর্মকর্তারা মাটিতে নোটের স্তূপের মাঝে বসে মেশিনের সাহায্যে টাকা গুনছেন। মোট তিনটি মেশিনে প্রায় দুদিন ধরে টাকা গোনা হয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন শহরে পীযূষের সংস্থাতেও তল্লাশি করা হয়।
কনৌজে তার পৈতৃক বাড়িতে ১৮টি আলমারির খোঁজ পান তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে ৫০০টি চাবির থোকাও পেয়েছেন তারা। ওই চাবিগুলোর সাহায্যে ওই আলমারি খুলে তল্লাশির চেষ্টা চলছে।
বিপুল সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও পীযূষ অত্যন্ত সাধারণ পুরোনো একটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। বেশির ভাগ সময় তিনি স্কুটারে চলাফেরা করতেন। সুগন্ধির ব্যবসা ছাড়াও পেট্রল পাম্প, পান-মসলাসহ একাধিক ব্যবসা ছিল পীযূষের।