মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে বিমান হামলার পর অন্তত ৯ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। নিহতদের অনেকে বেসামরিক নাগরিক, যার মধ্যে রয়েছে দুই শিশু।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ-তে মঙ্গলবার প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার পর ম্যাগওয়ে অঞ্চলের গাংগ শহরের উপকণ্ঠে নান খার গ্রামে উদ্ধারকর্মীরা মৃতদেহগুলো দেখতে পান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,নিহতদের মধ্যে দুজন অভ্যুত্থানবিরোধী মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্য, বাকি সাতজন গ্রামবাসী।
এএফপিকে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, সামরিক বাহিনীর এই বর্বরোচিত হামলায় পাঁচটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে এবং সেনারা প্রায় ৬ হাজার অধিবাসীর এই গ্রামে হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছেন।
তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক সরকারের নির্দেশে কমপক্ষে তিনটি হেলিকপ্টার থেকে গ্রামটিতে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে অভ্যুত্থানবিরোধী মিলিশিয়াদের এক মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, অভ্যুত্থান দমনে একটি সামরিক হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালানো হয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বাহিনী নির্যাতন চালিয়ে আসছে এমন অভিযোগ রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ সংক্রান্ত একটি মামলাও বিচারাধীন আছে। ঠিক এমন সময় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে এবার বেসামরিক লোকদের ওপর গণহত্যা চালানোর বিষয়টি উঠে আসে সংবাদ সংস্থা বিবিসির এক অনুসন্ধানে।
গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চাক্ষুষ সাক্ষী ও বেঁচে ফেরা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সেনারা শুরুতে গ্রামবাসীদের ঘিরে ধরে। এরপর যাদের হত্যা করা হবে, তাদের সবার থেকে আলাদা করা হয়। পরে তাদের হত্যা করা হয়। এসব কর্মকাণ্ডে শামিল অনেক সেনাই ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক।
গত ফেব্রুয়ারিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখল করে।
এর পর থেকেই সে দেশের বেসামরিক লোকজন সেনাশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। বিভিন্ন স্থানে বেসামরিক লোকজন সশস্ত্র প্রতিরোধও গড়ে তুলেছেন। এর পর অভ্যুত্থান প্রতিরোধের নামে বিমান হামলাসহ সশস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে সামরিক সরকার।