কলকাতা পৌরসভা নির্বাচনের কথা ছিল দেড় বছর আগে, কিন্তু করোনা মহামারির কারণে তা পিছিয়ে যায়। সেই অপেক্ষা শেষ হচ্ছে। শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন কলকাতাবাসী।
স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
গেল বিধান সভার নির্বাচনের মতো এই ভোটেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি। দৌড়ে রয়েছে বামেরাও৷ আর গুরুত্বের দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার পর কলকাতা পৌর ভোটে থাকে সবার নজর।
ভোট উপলক্ষে কলকাতাজুড়ে নেয়া হয়েছে করা নিরাপত্তাব্যবস্থা। নিরাপত্তার দায়িত্বে কলকাতা পুলিশ। ২৩ হাজার ৫০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে কলকাতায়। যার মধ্যে ১৮ হাজার কলকাতা পুলিশের কর্মী। বাকি সাড়ে ৫ হাজার রাজ্য পুলিশের কর্মী।
সকাল থেকে রাস্তায় রয়েছেন পুলিশের ১৮ জন ডিসি। শহরজুড়ে ২০০ পুলিশ পিকেট। মোতায়েন করা হয়েছে ৭৮টি কুইক রেসপন্স টিম। ৩৫টি স্পর্শকাতর এলাকায় থাকছে হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড।
ভোটের আগেই আইনি লড়াইয়ে হার হয়েছে বিজেপির। ভোটে নিরাপত্তার জন্য বারবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন করেছিল দলটি। বিজেপির এই আবেদন আদালতে শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। রাজ্য পুলিশের নজরদারিতে পৌর ভোট করার নির্দেশ দেয় আদালত।
প্রধান বিচারপতি কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে কার্যত বহাল রেখে জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াই কলকাতায় ভোট হবে। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।
আদালতের এই নির্দেশ বড় চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুলিশের জন্যও। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
তা ছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ১ হাজার ৭৭৬টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতেই ভোটকর্মীদের জন্য মাস্ক ও স্যানিটাইজারেরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
২১ ডিসেম্বর ভোটের গণনা। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। ২০২০ সালের মে মাসে কলকাতা পৌরসভার নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এরপর প্রায় দেড় বছর পর করে ফের ভোট হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কারণেই পিছিয়ে যায় ভোটপ্রক্রিয়া।
১৪৪টি ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি কলকাতা পৌর এলাকায় এবার মোট ভোটার ৪০ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫২ জন। সবচেয়ে বেশি ভোটার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে, ৯৫ হাজার ৩৮ জন। সবচেয়ে কম ভোটার রয়েছেন ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এখানে ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৩৩। কলকাতায় ওয়ার্ড পিছু গড় ভোটার ২৮ হাজার ১১৪ জন।
ভোট গ্রহণের জন্য মোট ৪ হাজার ৯৫৯টি বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১৩৯টি বুথকে ‘স্পর্শকাতর’ বলে চিহ্নিত করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।