দুই দশক ধরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান ও আফগানিস্তানে চলা যুদ্ধের তীব্রতা কমে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এমন সব দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত থেকে সম্প্রতি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে। তবে চীনের বর্ধিত সামরিক শক্তিকে ফের আগ্রাসনের হুমকি হিসেবে বিবেচনায় রেখে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গেল বছরের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ব্যয় পাঁচ শতাংশ বাড়িয়ে নতুন বাজেট পাস হয়েছে দেশটির আইনসভা কংগ্রেসে।
কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে গত বুধবার ৮৯-১০ ভোটে পাস হয় বাজেটটি। এর এক সপ্তাহ আগে, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্যরা এই বাজেটের প্রস্তাবে সম্মতি দেন।
অনেকটা সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট পাসের এই প্রক্রিয়ার প্রশংসা করে দেশটির প্রধান দুই দল ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতারা জানান, এটি জাতীয় ইস্যুতে মতৈক্যের রাজনীতির পরিচয় বহন করে। তবে এই বাজেট পাসের তীব্র সমালোচনা করেছেন উদারপন্থি রাজনীতিবিদ ও যুদ্ধবিরোধী বিভিন্ন পরামর্শদাতা সংগঠন।
যুক্তরাষ্ট্রের উদারপন্থি পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে কাজ করা ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক সংগঠন উইন উইদাউট ওয়ারের নির্বাহী পরিচালক স্টিফেন মাইলস জানিয়েছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের যুক্তি দেখিয়ে গত দুই দশক প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়ে চলেছে ফেডারেল সরকার। সম্প্রতি আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর এখন চীনের আগ্রাসনের হুমকিকে নতুন যুক্তি হিসেবে সামনে নিয়ে এসেছে ওয়াশিংটন। আর এই খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে আবারও সামরিক ব্যয় বাড়িয়েছে ফেডারেল সরকার।’
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক আইনপ্রণেতা চীনকে প্রতিহত করাকে জাতীয় ইস্যু বানিয়ে প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি যৌক্তিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কংগ্রেস সদস্য ইলাইন লুরিয়া (কনজারভেটিভ ডেমোক্রেট) গত ৭ ডিসেম্বর তার টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়ে উদীয়মান চীনের আগ্রাসনের হুমকির মোকাবিলা করতে হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি ও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কে ফের চিড় ধরেছে। তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে চীন সরকার।
উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীনের চালানো দমন-পীড়নকে ‘গণহত্যা’ উল্লেখ করে কড়া সমালোচনা করেছে ওয়াশিংটন। এরপরই চীনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙঘনের অভিযোগ তুলে বেইজিংয়ে আয়োজিত উইন্টার অলিম্পিক গেমসে অংশ নেননি যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড়রা।