দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় দুগ্ধ ব্র্যান্ড তাদের বিজ্ঞাপনচিত্রে নারীকে গাভি হিসেবে উপস্থাপনের জন্য ক্ষমা চেয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া একটি প্রোমো ভিডিওতে দেখা যায়, একদল নারী মাঠে ঘোরাফেরা করছে। কেউ যোগব্যায়াম করছে। কেউ পানি পান করছে। আর তাদের এই কর্মকাণ্ড লুকিয়ে থাকা একজন পুরুষ গোপনে ক্যামেরায় ধারণ করছে।
পুরুষটিকে বলতে শোনা যায়, অবশেষে আমরা বিশুদ্ধ জায়গা থেকে তাদের ক্যামেরায় ধারণ করতে সক্ষম হয়েছি। সেই মুহূর্তেই তার পায়ের চাপে শুকনো ডাল ভাঙার শব্দ হয়। নারীরা শব্দের উৎসের দিকে তাকায়। আর সেই পুরুষ দেখতে পায়, মাঠে থাকা নারীরা সব গাভিতে পরিণত হয়েছে। সে হতবাক হয়ে যায়!
এরপর বিজ্ঞাপনের শেষে একই কণ্ঠ বলতে থাকে- পরিষ্কার পানি, অর্গানিক খাদ্য, ১০০% বিশুদ্ধ সিউল দুধ। চেওংইয়াংয়ের মনোরম প্রকৃতিতে একটি অর্গানিক খামার থেকে সংগৃহীত অর্গানিক দুধ।
এই প্রমোশনাল ভিডিও আপলোডের পর নেটিজেনদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগের পাশাপাশি গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো বিষয়কে স্বাভাবিক হিসেবে দেখানো হয়েছে বিজ্ঞাপনচিত্রটিতে- এমন অভিমতই দেন অধিকাংশ নেটিজেন।
গোপনে ভিডিও করে তা আপলোড করে দেয়ার মতো ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ার নারীদের সঙ্গে প্রায়ই ঘটে থাকে। স্থানীয়ভাবে এ ধরনের কাজকে ‘মোলকা’ বলা হয়। মোলকার অর্থ হলো গোপন ক্যামেরা। বিজ্ঞাপনচিত্রটিতে ‘মোলকা’ সমস্যাকে হালকাভাবে দেখানো হয়েছে বলে নেটিজেনরা অভিযোগ করেন।
ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে ভিডিওটি সরিয়ে ফেলে। ততক্ষণে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। নেটিজেনরাই ভিডিওটি পুনরায় অনলাইনে আপলোড করে দেন।
সিউল ডেইরি কো-অপারেটিভের পক্ষ থেকে একটি অনলাইন বার্তায় জানানো হয়, গত মাসের ২৯ তারিখে বিজ্ঞাপনচিত্রটি প্রকাশের পর যারা অস্বস্তি বোধ করেছেন তাদের কাছে প্রতিষ্ঠানটি মাথানত করে ক্ষমা চায়।
প্রতিষ্ঠানটি বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং অভ্যন্তরীণভাবেও বিষয়টি যাচাই করা হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য তারা বাড়তি সতর্ক থাকবে।
ডেইরি কো-অপারেটিভের এটি প্রথম কোনো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নয়। ২০০৩ সালে কোম্পানিটি একটি মঞ্চ আয়োজন করে যাতে নগ্ন মডেলরা পরস্পরের দিকে দই স্প্রে করেন।