গান বাজনার সঙ্গে জড়িত আফগানিস্তানের একটি বড় দলকে আশ্রয় দিয়েছে পর্তুগাল। ২৭৩ জনের এই দলটিতে আফগানিস্তানের আলোচিত নারী বাদক দলটিও রয়েছে।
সোমবার দ্য ন্যাশনাল নিউজের এক প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়।
পর্তুগালে আশ্রয় পাওয়া বাদকদের সবাই আফগান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিকের সদস্য। সোমবার এই সংস্থাটির সদস্যরা ছাড়াও তাদের আত্মীয়-স্বজনও পর্তুগালের মাটিতে পা রাখেন।
গত আগস্টে তালিবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করলে গান-বাজনার সঙ্গে জড়িতদের ভবিষ্যত অনিশ্চত হয়ে পড়ে। কারণ তালেবানদের কঠিনতম শারিয়া আইন অনুযায়ী, নাচ-গান নিষিদ্ধ।
পর্তুগালে পা রাখা দলটির মধ্যে আফগান নারী বাদক ১৮ বছর বয়সী সগুফা সাফিও ছিলেন। তিনি জানান, একদিন স্বদেশে গিয়ে আবারও সঙ্গীত ফিরিয়ে আনাই তার স্বপ্ন।
সগুফা আফগানিস্তানের আলোচিত নারী বাদকের দল ‘জোহরা’র সদস্য। এই দলটিতে অন্তত ৩৫ জন নারী বাদক রয়েছেন, যাদের সবার বয়স ১৩ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। ইতোপূর্বে তারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় স্টেজ শো করেছেন। এর মধ্যে নিউ ইয়র্কের কার্নেগি হল থেকে শুরু করে ওমানের রয়্যাল অপেরা হাউসও মাতিয়েছেন তারা।
জোহরা’র অপর সদস্য মারজিয়া আনওয়ারি বলেন, ‘পর্তুগালে পৌঁছে আমি খুব খুশি। কারণ, আমার বন্ধুদের মুখেও হাসি ফুটেছে। তারাই আফগানিস্তানের ভবিষ্যত।’
এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যখন তালেবানরা ক্ষমতায় ছিল তখনও আফগানিস্তানে সঙ্গীত নিষিদ্ধ ছিল। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সঙ্গীত নিষিদ্ধ না করলেও ইতোমধ্যেই বিভিন্ন রেডিও স্টেশনকে সঙ্গীত না পরিবেশনের নির্দেশ দিয়েছে তারা।
তালেবানরা ক্ষমতা নেয়ার পর আফগান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিকের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আহমদ সারমাস্ত বুঝে গিয়েছিলেন- শিক্ষার্থীদের নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব তাকে দেশ ত্যাগ করতে হবে। এজন্য তিনি কিছু ডোনারের সহায়তায় দলবল নিয়ে প্রথমে কাতারে পালিয়ে যান। পরে পুরো দলটিকেই আশ্রয় দিয়েছে পর্তুগাল।
সারমাস্ত আশা প্রকাশ করেন, আফগানিস্তানের সমৃদ্ধ সঙ্গীত ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখবে তার শিষ্যরা। আর আফগান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিকের কার্যক্রম পর্তুগালেই শুরু হবে আবার।