আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের প্রায় চার মাস পরেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না মেলায় এবার বিষয়টি নিয়ে চীনের সমর্থন চেয়েছে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান।
গোষ্ঠীটির মুখপাত্র এবং তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপমন্ত্রী জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, তালেবান সরকারের স্বীকৃতির জন্য বিভিন্ন দেশ বিশেষত চীনের সমর্থন দরকার।
সোমবার আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম খামানিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘এই অঞ্চলে চীন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ। চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক তালেবানের জন্য বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে।’
জাবিহুল্লার বরাত দিয়ে তালেবান সরকারের আরেক মুখপাত্র বিলাল কারিমি বলেন, ‘অন্যদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে তালেবান। একই সঙ্গে কাউকে আফগানিস্তানের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতেও দেবে না।
এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘আমরা চাই চীনসহ অন্যরা আফগানিস্তানে বিনিয়োগ করুক। এখানে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তালেবান সরকার।’
রোববার কাবুলে একটি ব্যয়বহুল নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন করেছে চীন। সেখানে দেশটির রাষ্ট্রদূত ওয়াং ইয়ু জানান, চীন আফগানিস্তানের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত এপ্রিলে ঘোষণা দেন, দুই দশকের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে তার দেশের সেনাবাহিনী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান ছেড়ে যাবে। এরপর মে মাসে আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করে তালেবান বাহিনী।
ওই সময় থেকেই গোষ্ঠীটিকে সমর্থন দিয়ে আসছিল চীন। ভূরাজনীতি ও খনিজ সম্পদের কারণে আফগানিস্তানে নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইছে দেশটি।
এ বছরের ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের প্রায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় কট্টরপন্থি তালেবান, দেশকে ঘোষণা করে ‘ইসলামিক আমিরাত’ হিসেবে। তবে নারী অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে বিতর্কিত অবস্থানের কারণে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
এমন পরিস্থিতি সংকটের মুখে পড়েছে আফগানিস্তানের অর্থনীতি। সম্প্রতি দেশটিতে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, সাধারণ নাগরিকরা অর্থকষ্টে ভুগলেও বেতন হিসেবে বিপুল টাকা নিচ্ছেন শীর্ষ তালেবান নেতারা।