যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী টর্নেডো। এতে ইতিমধ্যেই ৫৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে মৃত মানুষের সংখ্যাটি শতাধিক পেরিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবার বিকেলে সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস, ইলিনয়, কেন্টাকি, মিসৌরি এবং টেনেসি এ পাঁচ রাজ্যে কমপক্ষে ২৪টি টর্নেডো আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গরাজ্য হলো কেন্টাকি।
কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার জানান, শুক্রবার গভীর রাতে দক্ষিণ-পশ্চিম কেন্টাকিতে টর্নেডো আঘাত হানার পর অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আশঙ্কা করছি, কেন্টাকিয়ানদের মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ অতিক্রম করে যাবে। সম্ভবত ৭০ থেকে ১০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যেতে পারে।’
প্রাথমিক অনুসন্ধানে কেন্টাকিতে পর পর অন্তত চারটি টর্নেডো আঘাত হানার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি টর্নেডো অন্তত ২০০ মাইল এলাকাজুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। এই রাজ্যের ১৫টি কাউন্টি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এর মধ্যে গ্রেভস কাউন্টির মেফিল্ড শহরে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে একটি মোমবাতির কারখানায় ১১০ জন আটকা পড়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত কয়েক ডজন মারা যেতে পারেন।
এবারের টর্নেডোকে কেন্টাকির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় টর্নেডো হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বেসিয়ার।
এ ছাড়া মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে আরকানসাস এবং ইলিনয়েও। ইলিনয়ে অ্যামাজনের একটি গুদামে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ক্রেগহেড কাউন্টির বিচারক মারভিন ডে বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, টর্নেডোর ফলে আরকানসাসের একটি নার্সিং হোম আংশিক ভেঙে পড়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন অন্তত ২০ জন মানুষ। টর্নেডো আঘাত হানায় বেশ কয়েকজন ওই ভবনের বেজমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
টর্নেডোর কারণে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে ‘উল্লেখযোগ্য ক্ষতি’ করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হপকিন্স কাউন্টিতে প্রচণ্ড বাতাসে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে বলে সেখানকার শেরিফ ম্যাট স্যান্ডারসন স্থানীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলকে জানিয়েছেন।
টর্নেডো আঘাত হানার পর কেন্টাকিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিবিসি।
আরকানসাস, ইলিনয়, কেন্টাকি, মিসৌরি ও টেনেসি এই পাঁচটি রাজ্যে কমপক্ষে ২৪টি টর্নেডোর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে এনওএএ (NOAA) স্টর্ম প্রেডিকশন সেন্টার।
একটি টর্নেডো আরকানসাস থেকে কেনটাকি পর্যন্ত বিশাল দূরত্ব (২২৭ মাইল) পাড়ি দিয়েছে, যা সম্ভবত ১৯২৫ সালের পর কোনো টর্নেডোর সবচেয়ে লম্বা দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার ঘটনা।
ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে জোর উদ্ধার অভিযান চলছে। এসব উদ্ধার অভিযানে উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে রয়েছে পুলিশও।
বিভিন্ন রাজ্যে ২ লাখ ৫৭ হাজার নাগরিক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন। আর টর্নেডোতে ঝুঁকির মধ্যে ছিলেন অন্তত সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ।