স্থগিত ঘোষণা করা হলো ভারতের ঐতিহাসিক চলমান কৃষক আন্দোলন। ৩৭৮ দিন ধরে দিল্লির তিনটি সীমান্তে জাতীয় সড়কে অবস্থান করে কৃষকরা ছিনিয়ে নিয়েছেন তাদের জয়। কৃষকদের দাবি মেনে সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই বাতিল করা হয়েছে তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন।
মসৃন ছিল না নজিরবিহীন কৃষক আন্দোলনের গতিপথ। ৭০০ জন অন্দোলনরত কৃষক মৃত্যুবরণ করেছে গত একবছরে। ৩৭৮ দিন ধরে সড়কে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষার মধ্যে আন্দোলনে দৃঢ় থেকেছেন কৃষকরা।
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা বৃহস্পতিবার দিল্লির সীমান্তে তাদের বিক্ষোভ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনটি কৃষি আইন বাতিল এবং ফসলের ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের (এমএসপি) আইনি গ্যারান্টিসহ অন্যান্য ইস্যুতে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন।
কিষাণ মোর্চা ঘোষণা করেছে ১১ ডিসেম্বর শনিবার তাদের বিক্ষোভ শেষ করবেন এবং দিল্লির তিনটি সীমান্তে অবস্থানরত কৃষকরা তাদের বাড়িতে ফিরে যাবেন। কৃষক সংগঠনগুলি বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় বিজয় প্রার্থনা এবং ১১ ডিসেম্বর সকাল ৯ টায় দিল্লির সীমান্তে সিংঘু এবং টিকরিতে বিক্ষোভের জায়গায় বিজয় মিছিল করবে।
পাঞ্জাবের কৃষক নেতারা ১৩ ডিসেম্বর অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে প্রণাম করার পরিকল্পনা করেছেন৷ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা ১৫ জানুয়ারি দিল্লিতে আরেকটি সভা করবে৷
ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা যোগিন্দর উগরাহান জানিয়েছেন, আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সমস্ত পুলিশ মামলা নিঃশর্ত প্রত্যাহারসহ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিভিন্ন প্রস্তাব সন্বলিত কেন্দ্রীয় কৃষি সচিব স্বাক্ষরিত একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি মোর্চা পেয়েছে।
কৃষক মোর্চার অন্যতম নেতা বলবীর সিং রাজেওয়াল বলেছেন, “আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। সরকার সম্মত প্রস্তাবগুলি বাস্তবায়ন করে কিনা তা পর্যালোচনা করতে ইউনিয়নগুলি ১৫ জানুয়ারী বৈঠক করবে।”
সরকার বুধবার সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার কাছে একটি খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছিল এবং বলেছিল যে তিন কৃষি আইন বাতিলের প্রেক্ষিতে, কৃষকদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই এবং সংগঠনগুলিকে আন্দোলন বন্ধ করার অনুরোধ জানায়।