ভারত বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র এবং সবচেয়ে অসম দেশের তালিকায় যোগ দিয়েছে, যেখানে একদিকে দারিদ্র্যের হার বাড়ছে, অন্যদিকে ধনিক শ্রেণি আরও ধনী হচ্ছে।
বিশ্ব বৈষম্য রিপোর্ট-২০২২ (ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি রিপোর্ট-২০২২) অনুসারে, ভারতের জনসংখ্যার শীর্ষ ১ শতাংশ নাগরিকের কাছে জাতীয় আয়ের ২২ শতাংশ, ১০ শতাংশের কাছে মোট জাতীয় আয়ের ৫৭ শতাংশ, যেখানে নিম্ন আয়ের (৫০ শতাংশ) জনসংখ্যার অংশ মাত্র ১৩ শতাংশ।
প্রতিবেদনে ২০২০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক আয়ের হ্রাসকেও চিহ্নিত করা হয়েছে, যার প্রায় অর্ধেক ধনী দেশগুলোতে এবং বাকি নিম্ন-আয়ের ও উদীয়মান দেশগুলোতে। এর জন্য প্রাথমিকভাবে "দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আরও স্পষ্টভাবে" ভারতের প্রভাবের কারণে দায়ী করা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি ল্যাবের সহপরিচালক লুকাস চ্যান্সেলের লেখা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যখন ভারতকে বিশ্লেষণ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তখন দেখা যাচ্ছে যে ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী ৫০ শতাংশ আয়ের অংশ আসলে সামান্য বেড়েছে।'
লুকাস চ্যান্সেলের সঙ্গে এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটি, ইমানুয়েল সায়েজ এবং গ্যাব্রিয়েল জুকম্যান।
রিপোর্ট অনুসারে, ভারতের মধ্যবিত্তরা তুলনামূলকভাবে দরিদ্র, যাদের গড় সম্পদ মাত্র ৭ লাখ ২৩ হাজার ৯৩০ টাকা বা মোট জাতীয় আয়ের ২৯.৫ শতাংশ। তুলনায়, শীর্ষ ১০ শতাংশ এবং ১ শতাংশ যথাক্রমে ৬৫ শতাংশ (৬৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭০ টাকা) এবং ৩৩ শতাংশ (৩ কোটি ২৪ লাখ ৪৯ হাজার ৩৬০ টাকা) সম্পদের অধিকারী।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার গড় জাতীয় আয় ২ লাখ ৪ হাজার ২০০ টাকা, যেখানে নিম্ন স্তরের (৫০ শতাংশ) আয় ৫৩ হাজার ৬১০ টাকা। একই সময়ে জনসংখ্যার শীর্ষ ১০ শতাংশের গড় আয় তাদের থেকে প্রায় ২০ গুণ (১১ লাখ ৬৬ হাজার ৫২০ টাকা) বেশি।
তাদের মতে, ভারতে পরিবারপিছু গড় সম্পদের পরিমাণ ৯ লাখ ৮৩ হাজার ১০ টাকা, যার মধ্যে নিম্ন স্তরের (৫০ শতাংশ) প্রায় কিছুই নেই এবং মোট ৬৬ হাজার ২৮০ টাকার মধ্যে ৬ শতাংশের গড় সম্পদ রয়েছে।
বৈষম্যের প্রতিবেদন অনুসারে, বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের সময় যেভাবে বিশ্বব্যাপী বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছিল, আজকেও একই রকম দেখা যাচ্ছে।