কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান ক্ষমতায় আসার পর কর্মক্ষেত্রে নারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় আফগানিস্তানের প্রায় এক বিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।
সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কর্মস্থলে নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া আফগানিস্তানের বিপর্যয়কর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। কর্মক্ষেত্রে নারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় আফগান অর্থনীতির এক বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে, যা মোট জিডিপির পাঁচ শতাংশ।
সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে বৈদেশিক সাহায্য খুঁজছে তালেবান সরকার।
জাতিসংঘের এই নতুন প্রতিবেদনে আফগান অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি ও দরপতনের বিপর্যয়কর চিত্রও উঠে এসেছে।
ভবিষ্যতে আরও বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় তালেবানের প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসান আখুন্দ বিদেশি অর্থনৈতিক সাহায্য কামনা করেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে শরিয়া আইনের মধ্যে থেকেই নারীর অধিকার নিশ্চিত করবে তালেবান।
মোল্লা হাসান আখুন্দ ছাড়াও আরও অনেক তালেবান নেতা এ ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে কীভাবে তারা নারীদের সহযোগিতা করবেন সেটি পরিষ্কার করতে পারেননি।
এ বছরের আগস্টে ক্ষমতা নেয়ার পরপরই সরকারি অফিসের নারীকর্মীদের কর্মক্ষেত্রে আসতে নিষেধ করে দেয় তালেবান। এ ছাড়াও সংগঠনটি মেয়েদের স্কুলে আসাও বন্ধ করে দেয়। স্বল্প সংখ্যক নারী, যারা নার্সিংয়ের মতো জরুরি সেবাখাতে কাজ করেন, তাদের কাজে যোগদানের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
তালেবান ক্ষমতায় আসার আগে আফগানিস্তানের কর্মক্ষেত্রের ২০ শতাংশ জুড়ে ছিলেন নারীরা।
ইউএনডিপির প্রধান আবদুল্লাহ আল দারদারি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া আফগান অর্থনীতির পুনরুদ্ধার কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমাদের প্রতিবেদন দেখিয়েছে একই স্তরের পড়াশোনা করা পুরুষের চেয়ে কর্মক্ষেত্রে আফগান নারীদের উৎপাদনশীলতা বেশি ছিল।’
সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগান জিডিপিতে বৈদেশিক সাহায্যের নির্ভরতা ছিল ৪০ শতাংশ। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশটি ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়ে। এ ছাড়া আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নয় বিলিয়ন ডলার জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক।
যে কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তার আগে নারী ও সংখ্যালঘুদের প্রতি তালেবানের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাইছে পশ্চিমা দেশগুলো।