অনলাইনে গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রে ফেসবুক ব্যবহার হচ্ছে- এমন অভিযোগ পুরোনো। ফেসবুকের এলগরিদম গুজব শনাক্তের ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলেও দাবি করে আসছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
সম্প্রতি বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছে ফেসবুক। ভুয়া ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এমন পাঁচ শতাধিক অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছে ফেসবুক। বলা হচ্ছে, এসব অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করত চীনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
ব্যবহারকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে ৫২৪টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ২০টি পেজ, ৪টি গ্রুপ ও ৮৬টি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক।
বিবিসির খবরে বলা হচ্ছে, উইলসন এডওয়ার্ডস নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার হয় করোনার উৎস খুঁজতে যে তদন্ত দল কাজ করছে তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র। আর চীনের গণমাধ্যমগুলো সেটা ফলাও করে প্রচার করছে।
ওই প্রোফাইল ঘেঁটে জানা যায়, সুইজারল্যান্ডের নাগরিক এডওয়ার্ডস একজন জীববিজ্ঞানী। তবে সুইস সরকার বলছে, এ নামে তাদের দেশে কারও অস্তিত্ব নেই।
গত জুলাইয়ে উইলসন এডওয়ার্ডস নামের অ্যাকাউন্ট থেকে নিজেকে সুইস জীববিজ্ঞানী দাবি করে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে দলটি করোনার উৎস খুঁজছে, তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র চাপ প্রয়োগ করছে, যেন দায় চীনের ওপর চাপানো হয়।
সিজিটিএন, সাংহাই ডেইলি, গ্লোবাল টাইমসসহ চীনের প্রায় সব সরকারি গণমাধ্যম ওই পোস্টটিকে গুরুত্বসহকারে প্রচার করে। যদিও ওই পোস্টের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছিল।
ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা বলছে, এই অপপ্রচারগুলো চালানো হয়েছে চীনের সিচুয়ান সাইলেন্স ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানি থেকে।
সিচুয়ান সাইলেন্স ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড একটি তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান। চীনের জননিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রযুক্তিসংক্রান্ত বিষয়গুলোর দেখভাল করে তারা।
ফেসবুক বলছে, ভুয়া অ্যাকাউন্টগুলোর উৎপত্তিস্থল আড়াল রাখতে চীনা প্রতিষ্ঠানটি ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) প্রযুক্তির সহায়তা নেয়। ভুয়া আইডির চরিত্রকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে তারা ব্যবহার করেছে ‘মেশিন লার্নিং’ প্রযুক্তি।
করোনার উৎস এখনও অজানা। বিজ্ঞানীরা জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন রহস্য উদ্ঘাটনের। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, চীনের উহান থেকেই ছড়িয়েছে করোনার নতুন গোত্রটি। এ নিয়ে টানাপড়েন চলছে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে।