বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পশ্চিমবঙ্গে বাসে ছাত্রদের ছাড় ছিল, এখন নেই

  •    
  • ১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৯:৫০

করোনায় রাজ্যজুড়ে লকডাউনের আগে পর্যন্ত কোথাও ৫০ শতাংশ, কোথাও ৪০ শতাংশ ভাড়া দিতে হতো ছাত্রছাত্রীদের। করোনা সংকটকালে বাস পরিষেবা বন্ধ থাকায় বাস মালিকরা ক্ষতির মুখে পড়েন। এরপর রাজ্যের কোথাও আর তেমনভাবে তা বিবেচনা করা হচ্ছে না। বাস ভাড়ার ক্ষেত্রে ছাত্র বলে আর কিছু নেই। সবাই সাধারণ যাত্রী।

সরকারি বা বেসরকারি বাসের ভাড়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কোনো ছাড়ের নির্দেশনা নেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিবহন দপ্তরের তরফে। তবে অলিখিতভাবে কলকাতাসহ বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন রকম ছাড় পাওয়া যায়।

করোনায় রাজ্যজুড়ে লকডাউনের আগে পর্যন্ত কোথাও ৫০ শতাংশ, কোথাও ৪০ শতাংশ, কোথাও বা এক-তৃতীয়াংশ ভাড়া দিতে হতো ছাত্রছাত্রীদের। এ জন্য স্কুল-কলেজের সুপারিশপত্রসহ নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আবেদন করতে হতো। তার ভিত্তিতে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট রুটে নির্দিষ্ট দূরত্বের জন্য ছাড়ের অনুমতি দেয়া হতো।

করোনা সংকটকালে বাস পরিষেবা বন্ধ থাকায় বাস মালিকরা ক্ষতির মুখে পড়েন। তার ওপর জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে বাস মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বাস ভাড়া বৃদ্ধির জোরালো দাবি জানানো হয়।

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে বাস ভাড়া বৃদ্ধি করা হবে না । তবে বাস মালিকদের অন্যভাবে আমরা পুষিয়ে দেব।’

এই পরিস্থিতিতে বাস মালিক সংগঠনগুলি বিভিন্ন রুটে বিভিন্ন স্ল্যাবে নিজেদের মতো ৫ টাকা ১০ টাকা ভাড়া বাড়িয়ে নিয়েছেন। যাত্রীরাও গন্তব্যে পৌঁছানোর তাগিদে ৫ টাকা ১০ টাকা বেশি দিচ্ছেন। প্রতিবাদ হচ্ছে, কোথাও বা ঝগড়া বিবাদ হচ্ছে।

ফলে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলি ছাত্রদের ভাড়ায় আগে যে ছাড় দিত, এ সময় রাজ্যের কোথাও আর তেমনভাবে তা বিবেচনা করা হচ্ছে না। বাস ভাড়ার ক্ষেত্রে ছাত্র বলে আর কিছু নেই। সবাই সাধারণ যাত্রী।

সরকারি বাস ভাড়ায় ছাত্রদের কোনো ছাড় আছে কি না, সেটা পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছে জিজ্ঞেস করায় ওই কর্মকর্তা একটুক্ষণ চুপ করে থেকে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘না’। অন্য কোনো প্রশ্ন করার আগেই ফোন রেখে দেন।

নদীয়ার হরিণঘাটা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী স্নেহা বেলা এবং রাজদীপ মালাকার জানান, কলেজ আসা-যাওয়ার জন্য তারা এখন বাস ভাড়ায় কোনো ছাড় পান না। পুরো ভাড়া দিতে হয়।

কলকাতার এসবি/৩ রুটের কন্ডাক্টর আফতাব হোসেন বলেন, ‘বাস ভাড়ায় ছাত্রদের কোনো ছাড় নেই।’

মেটিয়াবুরুজ-রাজাবাজার পথে ১২/১ রুটের বাস কন্ডাক্টর বলেন, ‘ছাত্র বললে ১০ টাকায় দু টাকা ছেড়ে দেই।’

নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনার জাগুলি কচরাপাড়া রুটের ২৭ নম্বর বেসরকারি বাসের অপারেটর কেষ্ট দাস জানান, আগে ছাত্রছাত্রীদের ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়া হতো। এখন পুরোপুরি বন্ধ।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর-মজিলপুর বেসরকারি বাস ইউনিয়নের সম্পাদক আখতার শেখ জানান, ‘আগে আবেদন করলে ছাত্র ছাত্রীদের ৪০ শতাংশ ছাড় দেয়া হতো। এখন কোনো ছাড় নেই।’

শিয়ালদা ২৮ নম্বর রুটের বাস মালিক সংগঠনের পক্ষে সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘ছাত্রদের জন্য বাস ভাড়ায় কোনো ছাড় নেই । তবে কেউ বললে, আমরা বিবেচনা করি।’

বরিশা-কদমতলা রুটের বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের পক্ষে অমল সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, করোনা সংকটের বিধিনিষেধ এবং দীর্ঘকাল বাস না চালানোর ফলে বাস মালিকরা অর্থ সংকটে আছেন। এই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের থেকে দু-চার টাকা বেশি ভাড়া নিয়ে পরিষেবা চালু রাখা হয়েছে। বিরোধ নয়, যাত্রীরা ভালোবেসে বেশি ভাড়া দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে আলাদা করে ছাত্রছাত্রীদের জন্য কোনো ছাড়ের ব্যবস্থা নেই।’

ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এসইউসিআই কর্মী প্রভাশিষ দাস বলেন, ‘এখন ভাড়ায় কোথাও কোনো ছাড় নেই। বরঞ্চ অনেক বেশি টাকা দিয়েই ছাত্রদের স্কুল-কলেজে যাওয়া আসা করতে হয়। এটা রাজ্যের সব জেলার চিত্র বলা যায়। সরকার সঠিকভাবে ভাড়া কাঠামো না করে ছেড়ে রেখে দিয়েছে। ফলে মালিকরা ইচ্ছে মতো ভাড়া নিচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে বড় ধরনের ছাত্র আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

এ বিভাগের আরো খবর