করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ঠেকাতে আফ্রিকার উত্তরাঞ্চলের দেশগুলোতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা।
করোনা ঠেকাতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাকে বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, এটা আফ্রিকা অঞ্চলের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ।
বিবিসির খবরে বলা হয়, সিরিল রামাফোসা আফ্রিকার ওপর দেয়া ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় ‘গভীরভাবে মর্মাহত’ বলে উল্লেখ করেন। এতে দেশগুলোর সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে দাবি করে তিনি দ্রুত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানান।
যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও কিছু দেশ আফ্রিকায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
করোনার নতুন ধরন ঠেকাতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে ভ্রমণ আপাতত বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন।
ওমিক্রন ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এটি খুব দ্রুত সংক্রমিত ধরন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনার নতুন ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয় আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায়। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত বুধবার ধরনটি সম্পর্কে জানায়।
বতসোয়ানার পর সাউথ আফ্রিকার গৌটেং প্রদেশে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণটি শনাক্ত হয়। এরপর দেশটির প্রায় সব প্রদেশেই এটি ধরা পড়েছে।
সাউথ আফ্রিকার পাশাপাশি অনেক দেশেই এরই মধ্যে ওমিক্রন শনাক্ত করা হয়েছে।
ওমিক্রন শনাক্তের পর খুব দ্রুত পদক্ষেপ হিসেবে কয়েকটি দেশের আফ্রিকার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ঘটনার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এখনটি এমন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া উচিত নয়। এজন্য ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ওপর নজর দেয়া উচিত।
রোববার সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট রামাফোসা এক বক্তৃতায় বলেন, ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ভাইরাসটি ঠেকানোর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। এটা বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন। এর মাধ্যমে আফ্রিকার সঙ্গে অনায্য বৈষম্য করা হচ্ছে। ভাইরাসটির এই ধরন ছড়ানো ঠেকাতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কোনো কাজে আসবে না।’
তিনি বলেন, ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বা কড়াকড়ি করার ফলে আবারও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। করোনাভাইরাস মহামারি থেকে বিভিন্ন দেশ যে উত্তরণ করছিল, এমন কর্মকাণ্ডে সেটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
যেসব দেশ এরইমধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদের তা প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বান জানান সিরিল রামাফোসা।
তিনি বলেন, ‘আবারও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আগেই তাদের এ সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে হবে।’
ওমিক্রন ছড়ানোর কারণ হিসেবে রামাফোসা বিশ্বে করোনার টিকা বৈষম্যকে দায়ী করেন। আফ্রিকা সবচেয়ে বেশি টিকা বৈষম্যের শিকার হয়েছে বলেও দাবি তার।
আফ্রিকার বাইরে এরইমধ্যে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইসরায়েলের মতো দেশে।