বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উসকানির মামলায় রায়ের অপেক্ষায় সু চি

  •    
  • ২৮ নভেম্বর, ২০২১ ১০:৫৮

সু চির বিরুদ্ধে করা কমপক্ষে ১২টি মামলার কোনোটিরই রায় ঘোষণা করা হয়নি এখনও। এসব মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে কারাগারেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে হতে পারে ৭৬ বছর বয়সী এ নেত্রীকে। বিশ্লেষকদের মতে, মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব সু চি। তাই দেশটিতে সামরিক শাসন অব্যাহত রাখতে তাকে সারা জীবনের জন্য রাজনীতি থেকে উৎখাত করতে চায় সেনাবাহিনী।

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির বিরুদ্ধে উসকানির মামলায় রায় হতে পারে মঙ্গলবার। ফলে দুই দিনের মধ্যেই স্পষ্ট হতে পারে- কী আছে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত এ নেত্রীর ভাগ্যে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, একগুচ্ছ মামলার মধ্যে উসকানির মামলায় প্রথম রায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে সু চির।

প্রায় ১০ মাসে সু চির বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিক আমলের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন, দুর্নীতি, প্রতারণা, করোনাভাইরাস মহামারিকালীন বিধিনিষেধ উপেক্ষা, অবৈধ ওয়াকিটকি আমদানিসহ কমপক্ষে ১২টি মামলা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

সবশেষ গত ১৬ নভেম্বের সু চিসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে জালিয়াতির নতুন অভিযোগ গঠন করা হয়।

এখন পর্যন্ত কোনো মামলারই রায় ঘোষণা করা হয়নি। এসব মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে কারাগারেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে হতে পারে ৭৬ বছর বয়সী সু চিকে।

রায় ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা প্রথম মামলায় সু চির বিরুদ্ধে অভিযোগ, মিয়ানমারের সামরিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ উসকে দিয়েছেন তিনি।

১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী; আটক করে শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্তসহ অনেককে।

এরপর থেকেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে নজিরবিহীন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মিয়ানমার। বিক্ষোভ দমনে কঠোর হয় সেনাবাহিনী।

এ পর্যন্ত ১২ শ’র বেশি মানুষকে হত্যা ও ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স।

বিশ্লেষকদের মতে, মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব সু চি। তাই দেশটিতে সামরিক শাসন অব্যাহত রাখতে সু চিকে সারা জীবনের জন্য রাজনীতি থেকে উৎখাত করতে চায় সেনাবাহিনী। ফলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এসব মামলা।

মাঝে মাঝে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হিসেবে আখ্যায়িত উসকানির মামলাটিতে সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। সু চির অপরাধ হিসেবে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে জনগণকে উসকানি দিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে হুমকির দিকে ঠেলে দেয়ার কথা বলা হয়েছে অভিযোগপত্র।

রাজধানী নেপিডোতে সেনাবাহিনীর গঠিত বিশেষ আদালতে সু চির বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ ছিল। সু চির আইনজীবীদেরও গণমাধ্যমে কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

সু চিকে নিয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পরিকল্পনা স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। রায় বিলম্বিত হতে পারে বলেও শঙ্কা জানিয়েছেন তারা।

অভ্যুত্থানের কিছুদিন পর সু চির বিরুদ্ধে প্রথমে অনিবন্ধিত ওয়াকিটকি রাখা এবং ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় মহামারিকালীন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে সেনাবাহিনী। এরপর ধাপে ধাপে অন্য মামলাগুলো করে জান্তা।

প্রায় প্রতিদিনই আদালতে হাজিরা দিতে দিতে সু চি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

সাবেক জান্তা সরকারের আমলে ইয়াঙ্গুনে ঔপনিবেশিক আমলে পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত বাড়িতে অনেক বছর গৃহবন্দি ছিলেন সু চি। সে সময় বাড়ির সামনে জড়ো হওয়া লাখো জনতার সামনে মাঝে মাঝে বারান্দা দিয়ে দেখা দিতেন তিনি।

বর্তমানে অতি সুরক্ষিত রাজধানীতে অজ্ঞাত স্থানে সু চিকে বন্দি করে রেখেছে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং নেতৃত্বাধীন শাসকগোষ্ঠী। সু চির সঙ্গে আছে হাতে গোনা কয়েকজন কর্মী।

এখন বহির্বিশ্বের সঙ্গে সু চির যোগাযোগ নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে শুনানিপূর্ব বৈঠকেই সীমিত।

সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির অন্য শীর্ষ পদধারী নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা শেষের দিকে। চলতি মাসেই সাবেক এক মুখ্যমন্ত্রীকে ৭৫ বছর আর সু চির এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে জান্তা সরকার।

এ বিভাগের আরো খবর