ভারতের মেঘালয় কংগ্রেস ছেড়ে ১১ জন বিধায়ক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা।
বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনার মধ্য দিয়ে মেঘালয়ের বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল হতে যাচ্ছে তৃণমূল।
কংগ্রেস নয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে বলে মনে করছেন দল ত্যাগ করা নেতারা।
তাদের তৃণমূলে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে পূর্ব গারো পাহাড়ের প্রভাবশালী নেতা মুকুল সাংমা বলেন, ‘বিরোধীদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পারেন বিজেপিকে পর্যুদস্ত করতে।
‘দেশের গণতন্ত্র ভূলুন্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু কংগ্রেস মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারছে না। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা কাজ করব।’
২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মুকুল সাংমা। বর্তমানে তিনি কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা। কংগ্রেস মেঘালয়ে বিরোধী দলের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ বলে মনে করেন এই নেতা। বলেন, ‘দিল্লিকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজছিলাম, তাই তৃণমূলে যোগ দিলাম।’
মুকুল সাংমা বলেন, ‘একমাত্র তৃণমূলই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা রাখে। তাই এ পরিবারের সদস্য হতে পেরে আমি আপ্লুত।’
৬০ আসন বিশিষ্ট ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের বিধানসভায় ৪০ জন বিধায়ক নিয়ে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ)। আর কংগ্রেস ১৮ জন বিধায়ক নিয়ে মেঘালয় বিধানসভার বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিল।
মুকুল সাংমাসহ ১২ জন বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেয়ায় কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ জনে। অন্যদিকে তৃণমূল নতুন করে পেয়েছে ১২ জন বিধায়ক। আসন সংখ্যার ভিত্তিতে এখন মেঘালয় বিধানসভায় বিরোধীদল তৃণমূল।
২০১৮ সালে মেঘালয় বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইটা ছিল ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি ও কংগ্রেসের মধ্যে। কিন্তু ৬০ আসন বিশিষ্ট মেঘালয় বিধানসভায় ২১ টি আসনে জয়লাভ করে একক বৃহত্তম দল হয়েও সরকার গঠন করতে পারেনি কংগ্রেস।
এনপিপি (ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি) বিজেপির ২টি আসন আর আঞ্চলিক দলের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে এনডিএ। আর বিরোধী দলের আসনে বসে কংগ্রেস। পরে তিনজন কংগ্রেস বিধায়ক শাসক শিবিরে যোগ দিলে কংগ্রেসের বিধায়ক কমে দাড়ায় ১৮ জনে।
এদিকে সর্ব ভারতে ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি করে চলছে তৃণমূল। কংগ্রেসের অন্দরে ফাটল ধরিয়ে ত্রিপুরা, আসাম, গোয়া, হরিয়ানার পর মেঘালয় থেকে বিধায়করা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছে।
এ সম্পর্কে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাগড়ে সাংবাদিকদের জানান, সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের বৈঠকে ঠিক করা হয়, পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় কৃষিজাত সামগ্রী বিক্রির বিষয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলা হবে।
একই সঙ্গে, বিজেপি বিরোধিতায় তৃণমূলসহ সব বিরোধীদলের সঙ্গে জোট বাঁধার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়।