পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা পৌরসভার স্থগিত নির্বাচন আগামী ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ২২ ডিসেম্বর ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার থেকেই আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হলো। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আজকেও মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে যা, আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এটি চলবে। ৪ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন।
আইনি জটিলতায় আটকে ছিল পৌর নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা। ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা ও হাওড়া পৌরসভায় নির্বাচন করাতে চেয়েছিলো রাজ্য সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যের সব পৌরসভার ভোট একসঙ্গে গ্রহণ করতে আবেদন জানিয়ে রাজ্য বিজেপি সহসভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন।
কিন্তু গত সোমবার আদালতে হলফনামা দিয়ে রাজ্য সরকার জানায়, এই মুহূর্তে রাজ্যে ১২২ টি পৌরসভা মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। একসঙ্গে এতগুলো পৌরসভার ভোট করানো সম্ভব নয়। একসঙ্গে ভোট করার মতো ইভিএম মজুত নেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে।
তাই নির্বাচন কমিশনের পথ অনুসরণ করে কয়েক দফায় ভোট গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছে রাজ্য সরকার। এ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার।
এর মধ্যে আবার হাওড়া-বালি পৌরসভার বিচ্ছেদ বিলে সই করেননি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাই হাওড়াকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কলকাতা পৌরসভার ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন শুধু কলকাতা পৌরসভার ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করায় নানা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন দলের নেতারা।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এটি শাসক দলের নির্দেশ এবং নির্বাচন কমিশনের আত্মসমর্পণের বহিঃপ্রকাশ।’
তবে বিজেপি নেতার মন্তব্যের বিপরীতে রাজ্যসভার সাংসদ ও বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সৌগত রায় জানান, ‘রাজ্য নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সংস্থা। এ সিদ্ধান্তে রাজ্য সরকারের কোনো হাত নেই। সরকার চায় রাজ্যের সব পৌরসভার নির্বাচন দ্রুত হোক।'
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘এটার যুক্তিটা কী? পাগলা দাশুর রাজত্ব চলছে। বাকিগুলোতে ভোট ঘোষণা করলো না কেন? এই প্রশ্ন থাকবেই। নির্বাচন হবে, আমরা লড়বো। লড়াইয়ের মতো পরিস্থিতি যেন থাকে।’
নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন যেন প্রহসনে পরিণত না হয়। বিনা ভয়-ভীতিতে মানুষ যেন ভোট দিতে পারে। সরকারের কাছে এটাই আবেদন।’
করোনা পরিস্থিতির কারণে গতবছর থেকেই বাকি রয়েছে রাজ্যের ১১২ টি পৌর সভার ভোট। বিজেপি রাজ্যের সব পৌরসভার ভোট গ্রহণ একসঙ্গে চাইলেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আজকের বিজ্ঞপ্তিতে কেবলমাত্র কলকাতা পৌরসভার ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই কমিশনের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবার আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্য বিজেপি।