বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তারাদের বয়স গণনা কীভাবে

  •    
  • ২৪ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:২১

বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর তথ্য সংগ্রহের পরও সুপরিচিত তারারা বিজ্ঞানীদের নিত্যনতুন চমক দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে রেড সুপারজায়ান্ট হিসেবে পরিচিত বেটেলজিউস তারার আলো ম্লান হয়ে যেতে শুরু করে। সে সময় বিজ্ঞানীরা বুঝে উঠতে পারেননি সেখানে ঠিক কী ঘটছে। অনেকে ভেবেছিলেন যে তারাটি সুপারনোভা হিসেবে মহাজাগতিক বিস্ফোরণের শিকার হতে যাচ্ছে। পরে জানা যায় যে মানুষের মন খারাপের মতোই তারাদেরও মাঝে মাঝে নিভু নিভু দিন যেতে পারে।

দূর আকাশের জ্বলজ্বলে নক্ষত্র বা তারারা আজও অধরা রয়ে গেলেও তাদের রহস্যভেদ হয়েছে আগেই। তারাদের বিষয়ে বহুকালের অনেক অজানা তথ্যই আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে এখন জানা।

কয়েক শ বছর ধরে রাতের আকাশে তারাদের দিকে টেলিস্কোপ ধরে রাখার পর জ্যোতির্বিজ্ঞানী আর সাধারণ নক্ষত্রপ্রেমীরাও আজ যেকোনো তারার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো বলে দিতে পারে সহজেই। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে তারার ভর, গঠন ইত্যাদির কথা।

তারার ভর হিসাব করার প্রক্রিয়া তেমন কঠিন নয়। কোনো সঙ্গী তারা থাকলে সেটিকে প্রদক্ষিণরত তারাটি ঘুরে আসতে কত সময় নেয়, তা জানা এবং এরপর খানিকটা বীজগণিতের সূত্র প্রয়োগ করলেই জানা যাবে দ্বিতীয় তারাটির ভর। তারাটি কিসে তৈরি, তা জানতে হলে পরীক্ষা করতে হবে সেটি থেকে বিচ্ছুরিত আলোর বর্ণচ্ছটা।

সায়েন্স নিউজ ফর স্টুডেন্টসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আজও তারাদের বিষয়ে যে রহস্য পুরোপুরি ভেদ করে উঠতে পারেননি বিজ্ঞানীরা, সেটি হলো তারাদের বয়স যাচাই।

বাল্টিমোরের স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডেভিড সোডারব্লোম বলেন, ‘একমাত্র সূর্যের বয়সই জানি আমরা। অন্য তারাদের সম্ভাব্য বয়স জানতে সেগুলোর বিষয়ে হাতে থাকা তথ্য আর অন্য তারাদের সঙ্গে সেগুলোর তুলনামূলক একটি সম্পর্ক দাঁড় করাই আমরা।’

বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর তথ্য সংগ্রহের পরও সুপরিচিত তারারা বিজ্ঞানীদের নিত্যনতুন চমক দিয়ে যাচ্ছে।

২০১৯ সালে রেড সুপারজায়ান্ট হিসেবে পরিচিত বেটেলজিউস তারার আলো ম্লান হয়ে যেতে শুরু করে। সে সময় বিজ্ঞানীরা বুঝে উঠতে পারেননি সেখানে ঠিক কী ঘটছে। অনেকে ভেবেছিলেন যে তারাটি সুপারনোভা হিসেবে মহাজাগতিক বিস্ফোরণের শিকার হতে যাচ্ছে। পরে জানা যায় যে মানুষের মন খারাপের মতোই তারাদেরও মাঝে মাঝে নিভু নিভু দিন যেতে পারে।

আমাদের সৌরজগতের একমাত্র নক্ষত্র সূর্যের আচরণ অন্য মধ্যবয়সী নক্ষত্রের মতো নয় বলে যেদিন বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করলেন, সেদিনও অনেক নতুন হিসাবের সামনে দাঁড়াতে হয়েছিল তাদের।

বিজ্ঞানীরা জেনেছেন যে সমবয়সী ও সমভরের অন্য নক্ষত্রদের মতো সূর্যের চৌম্বকক্ষেত্র সমান সক্রিয় নয়। এর অর্থ হলো, মধ্যবয়সী তারাদের আচরণও এখন পর্যন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ নির্ধারণ করতে পারেননি গবেষকরা।

পদার্থবিদ্যার সূত্র ব্যবহার করে এবং পরোক্ষ বিভিন্ন পরিমাপের সঙ্গে তুলনা করে একটি তারার বয়স কেবল ধারণা করে নিতে পারেন বিজ্ঞানীরা। রকমভেদ অনুযায়ী একেক ধরনের তারার ক্ষেত্রে একেকটি পদ্ধতি অধিক কার্যকর বলে বিভিন্ন সময়ে জানা গেছে।

তারার বয়স নির্ণয় জরুরি কেন

মহাবিশ্বে একেকটি ছায়াপথ মানে নানা বয়সী বিপুলসংখ্যক তারার সমাহার। তারাদের বয়স জানা গেলে সংশ্লিষ্ট ছায়াপথের সৃষ্টি-বিবর্তন, কীভাবে সেটিতে বিভিন্ন গ্রহের জন্ম ইত্যাদি বিষয়ে বিশদ তথ্য জানা সম্ভব হতে পারে। তারার বয়স নির্ণয়ের মাধ্যমে অন্য সৌর জগৎগুলোতে প্রাণ সন্ধানের কাজও সহজ হয়ে যেতে পারে।

তারাদের জন্ম কীভাবে, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীদের ভালোই ধারণা আছে। তারাদের জীবনের গতি-প্রকৃতি, মৃত্যুর তথ্যও আর রহস্যে আটকে নেই। যেমন কম বয়সী তারায় হাইড্রোজেনের আধিক্য থাকে। দীর্ঘ সময় সেই হাইড্রোজেন জ্বালানির অনেকটা পুড়ে যাওয়ার পর তারারা নিভু নিভু হয়ে যায়। একপর্যায়ে এসব তারার মাধ্যমে মহাবিশ্বে গ্যাস ছড়িয়ে যায়- কখনও বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে, কখনও সামান্য গোঙানির পরই সেগুলো জড় পদার্থে রূপ নেয়।

এই একেকটি ধাপ একেকটি তারার জীবনে কখন আসে, সেটি সঠিকভাবে নির্ণয় করতে গিয়েই ধাঁধায় পড়ে যান বিজ্ঞানীরা। ভরের ওপর নির্ভর করে অনেক তারাই বয়সের মাইলফলক ছোঁয়ার পরেও বহু পথ পাড়ি দেয়, অনেক তারা তার আগেই নিভে যায়।

বিশাল নক্ষত্রের অনেকগুলোরই মৃত্যু ঘটেছে তুলনামূলক কম বয়সে। শত-কোটি বছর ধরে স্থিরভাবে জ্বলজ্বলে থেকে যাওয়া বিশাল আকৃতির তারার সংখ্যা হাতে গোনা।

বিংশ শতাব্দীতে ইজনার হারৎজস্প্রাং ও হেনরি নরিস রাসেল নামের দুই জ্যোতির্বিজ্ঞানী বয়সভেদে নক্ষত্রের তালিকা তৈরির নতুন একটি ধারণার প্রচলন করেন। তারা প্রতিটি তারার তাপমাত্রার সঙ্গে এর উজ্জ্বলতার তুলনামূলক ছক তৈরি করেছেন। সব তথ্য এক জায়গায় এনে বয়স অনুযায়ী তারাদের শ্রেণিবিভাগের এই ডায়াগ্রামটি হারৎজস্প্রাং-রাসেল ডায়াগ্রামস নামে পরিচিত।

বর্তমানে ওই নমুনাগুলো ব্যবহার করেই গুচ্ছ তারা, অর্থাৎ একই সময়ে জন্মেছে বলে মনে করা হয়- এমন তারাদের বয়সের একটি সাধারণ হিসাব বের করেন বিজ্ঞানীরা।

এ বিভাগের আরো খবর