জনমনে প্রচলিত ধারণা- কেউ হাঁচি দিলেই এক সেকেন্ডের জন্য তার দেহের মৃত্যু হয়; প্রতিবার হাঁচি, মানে ক্ষণিকের মৃত্যু।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এমন দাবি সম্বলিত পোস্টের দেখা মেলে প্রায়ই। গত ১৫ নভেম্বর ফেসবুকে তিনদিনে প্রায় ১০০ লাইক কুড়ানো একটি পোস্টেও লেখা হয়- ‘আপনি কি জানতেন? যখনই আপনি হাঁচি দেন, এক সেকেন্ডের জন্য আপনার মৃত্যু হয়।’
অনেকেই পোস্টে দেয়া তথ্যের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বিশ্বাসীর সংখ্যাও কিছু কম নয়।
একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘হাঁচি দেয়ার সময় হৃৎস্পন্দন এক সেকেন্ডের জন্য থেমে যায়। তাই কার্যত ওই একটি সেকেন্ডে আপনি মৃত।’
আরেক মন্তব্যকারী লিখেছেন, ‘আমি তো প্রতিদিন ১৫ বার মারা যাই!!!’
কিন্তু এটি বাস্তব নয়।
ইউএসএ টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, হাঁচি দেয়ার সময় রক্তচাপ খুব দ্রুত পরিবর্তন ও স্থিতিতে ফেরার কারণে আপনার হৃৎপিণ্ড একটি স্পন্দন অনুভব নাই করতে পারে, কিন্তু এর মানে মৃত্যু নয়।
নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ব্লাহম কার্ডিওভাস্কুলার ইনস্টিটিউটের সহযোগী পরিচালক ড. ক্লাইড ইয়ানসে বলেন, ‘এটা মিথ্যা। এ দাবির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। হাঁচির কারণে হৃৎপিণ্ড থেমে যায় না। এটা রূপকথার গল্প হিসেবে খারিজ করে দেয়া যায়।’
নাকের মাধ্যমে ধুলা, ভাইরাস বা বাতাসে থাকা কোনো ক্ষুদ্র ময়লা শরীরে ঢোকার চেষ্টা করলে নাসিকারন্ধ্র তা প্রতিরোধ করে। এটিরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হাঁচি।
কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির রাইনোলজির প্রধান ড. ডেভিড গুডিস বলেন, ‘হাঁচির মাধ্যমে ঘণ্টায় ১০০ মাইল গতিতে বাতাসে ভেসে বেড়ানো কণা মানবদেহ থেকে দূরে ছিটকে যায়। মানুষের পাশাপাশি ইঁদুর, কুকুর, বিড়ালসহ সব স্তন্যপায়ী প্রাণিই এ পদ্ধতি অনুসরণ করে।’