পাহাড় কেটে তৈরি হবে শহর। এমন শহর যেখানে চলবে না কোনো গাড়ি। থাকবে না গাড়ি চলাচলের রাস্তাও। সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত হওয়ার নজির গড়ে তুলবে। বিশ্বে প্রথম এমন শহর গড়ে উঠতে যাচ্ছে সৌদি আরবে।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দূষণমুক্ত শহর গড়ে তুলে নজির গড়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে সৌদি আরব। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৪ সালের মধ্যেই সেই শহর পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে। এই প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে ‘দ্য লাইন’। শহরের কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সাল থেকেই।
ওপর থেকে ছবি তুললে মনে হবে যেন কেউ জঙ্গলের মধ্যে একটি লাইন এঁকে দিয়েছেন। ১০৫ মাইল দীর্ঘ এলাকায় গড়ে উঠছে সেই শহর। তিনটি স্তর থাকবে শহরটিতে। একেবারে ওপরের স্তর থাকবে মাটির ওপরে। সেখানে শুধু হাঁটার পথ থাকবে।
এর নিচের দুটি স্তর থাকবে মাটির নিচে। সেখানে গাড়ি চলাচলের রাস্তা থাকবে। দ্বিতীয় স্তর মূলত পরিকাঠামো পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা থাকবে। তৃতীয় স্তর দিয়ে দ্রুত গতিসম্পন্ন ট্রেন এবং অন্যান্য যানবাহন যাতায়াত করবে। ফলে ওপরের স্তর থাকবে সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত।
১০ লাখ মানুষ একসঙ্গে বাস করতে পারবেন এই শহরে। শহরের নকশা এমন ভাবেই বানানো হবে, যাতে হাসপাতাল, স্কুল, রেস্তোরাঁসহ সব জায়গায় পাঁচ মিনিটের মধ্যে পৌঁছানো যায়। এই শহর থেকে আশপাশের অঞ্চলের যোগাযোগ স্থাপন হবে তৃতীয় স্তরের যাতায়াতব্যবস্থার মাধ্যমে।
পাহাড়-জঙ্গল কেটে তৈরি হচ্ছে এই দীর্ঘ লম্বা শহর, যত সম্ভব প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি কম করার জন্যই তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে শহরটিকে, যাতে কমসংখ্যক গাছ-পাহাড় কাটা যায়।
সৌদি আরব এই প্রকল্পে ২০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অন্তত তিন লাখ ৮০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪৮০০ কোটি ডলার বাড়বে।
পুরো শহরটিই হবে ‘নিওম’ প্রকল্পের আওতায়। ‘নিওম’ প্রকল্পটি ৫০ হাজার ডলারের প্রকল্প। সৌদি আরবের তাবুক প্রদেশের ১০ হাজার বর্গমাইল এলাকায় গড়ে উঠছে এই প্রকল্প। ‘নিওম’ এর অর্থই হলো নতুন ভবিষ্যৎ।
ড্রোন ট্যাক্সি, বিনোদনের জন্য জুরাসিক পার্কের মতো বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকছে।
পুরো শহরকে পর্যবেক্ষণে রাখবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি। প্রতিদিনের জীবনে বাসিন্দারা শহরে থাকতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হলে সেটি নথিভুক্ত করবে এবং ভবিষ্যতে সেই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে এই প্রযুক্তি।