পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বিদ্যমান সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধানে পথ খুঁজে বের করতে চায় ভারত ও চীন। দুই দেশের সীমান্তবিষয়ক কাজ ও পরামর্শের জন্য গঠন করা ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসালটেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন (ডব্লিউএমসিসি) স্থিতিশীল এ সম্পর্ক নিশ্চিতে একমত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ডব্লিউএমসিসির ২৩তম বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। বলা হয়, শান্তি ও স্থিতাবস্থা পুনরুদ্ধার করতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও প্রটোকলগুলো সম্পূর্ণরূপে মেনে চলতে দুই দেশ সম্মত হয়েছে।
চীন তার ২২ হাজার ১০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্তে দেশের টহল কার্যক্রমসংক্রান্ত বিতর্কিত নতুন স্থল সীমান্ত আইন চালু করার পর এটিই প্রথম ডব্লিউএমসিসির বৈঠক। ভারতের জন্য চীনের এই নতুন আইন বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ১০ অক্টোবর সীমান্ত বিরোধ নিয়ে দুই দেশের কর্পস কমান্ডার পর্যায়ে আলোচনার ১৩তম রাউন্ডে কোনও অগ্রগতি না হওয়ার পর ভারত ও চীন তাদের কঠোর অবস্থানে দৃঢ় থাকে।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা অচলাবস্থা কাটাতে বৃহস্পতিবার দুই দেশের কূটনীতিকরা ‘সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখায় অবশিষ্ট সমস্যাগুলোর একটি দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তায়’ সম্মত হন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডব্লিউএমসিসির বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের মধ্যে গত সেপ্টেম্বরে দুশানবেতে অনুষ্ঠিত বৈঠকের চুক্তির কথা মেনে চলার সিদ্ধান্ত হয়।
চুক্তিতে বলা হয়েছিল, দুই দেশের সামরিক ও কূটনৈতিক কর্মকর্তারা পূর্ব লাদাখ সীমান্তের অবশিষ্ট সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য পরস্পর আলোচনা চালিয়ে যাবেন।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পূর্ব লাদাখে সীমান্ত বিবাদ মেটাতে দুই দেশের কর্পস কমান্ডার পর্যায়ের ১৪তম বৈঠক যত দ্রুত সম্ভব করা।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পূর্ব এশিয়া) নবীন শ্রীবাস্তব। চীনের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সীমানা ও মহাসাগরীয় বিভাগের মহাপরিচালক হং লিয়াং।
২০২০ সালের জুনে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনা সংঘর্ষের পর থেকে চীন ও ভারত একে অপরের বিরুদ্ধে তীক্ষ্ণ বাক্যবিনিময় করে চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবারের বৈঠক শেষে দুই পক্ষই যৌথ বিবৃতি জারি করে বৈঠকের যে ফল প্রকাশ করেছে, তা ইতিবাচক বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এর আগে ডব্লিউএমসিসির বৈঠক হয়েছিল ২৫ জুন।