প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতার অভাবে নারী ও পুরুষের মধ্যে বাড়ছে বেতনের ব্যবধান; আগের চেয়েও বেশি বেতনবৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারীরা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এক নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।
জব সাইট গ্লাসডোরের একটি জরিপের ফল বলছে, পূর্ণকালীন নারী কর্মীদের মধ্যে প্রতি চারজনে মাত্র একজন কর্মক্ষেত্রে বেতনবিষয়ক তথ্যের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্তুষ্ট। কর্মীদের সন্তোষের অন্যতম প্রধান শর্ত স্বচ্ছতা হলেও তা উপেক্ষিত বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে।
স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপে দেখা গেছে যে বেতন নিয়ে গোপনীয়তা অবলম্বনের কারণে নারীদের প্রতি বৈষম্য বাড়ছে। ২০২০ সালে বেতন বাড়ানোর অনুরোধ করেননি ৬৭ শতাংশ নারী। পুরুষদের ক্ষেত্রে এ হার ৩৭ শতাংশ।
গত এক বছরে নারী-অধ্যুষিত খাতগুলোতে কর্মীদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ বা ৩৫ শতাংশ কর্মী বেতন বৃদ্ধির আবেদন করেছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও পর্যটনকেন্দ্রিক খাতগুলোর কথা।
অন্যদিকে পুরুষ-অধ্যুষিত খাত যেমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৬২ শতাংশ ও প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের ৫৬ শতাংশ কর্মী বেতন বৃদ্ধির আবেদন করেছেন।
অর্ধেকের বেশি নারী কর্মী (প্রায় ৫৬ শতাংশ) জানিয়েছেন যে তারা বেতন বাড়াতে বলার মতো আত্মবিশ্বাসই অর্জন করতে পারেননি। ফলে কাজে যোগ দেয়ার আগে মাত্র ৩৩ শতাংশ নারী বেতন নিয়ে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করতে পেরেছেন। বিপরীতে পুরুষের মধ্যে এ হার ৪৫ শতাংশ।
প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে দুজন জানান, প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বেতনই তারা মেনে নিয়েছেন। প্রতি ১০০ নারীর মধ্যে সংখ্যাটি ৪৩। পুরুষের ক্ষেত্রে এ হার ৩৫ শতাংশ।
পরবর্তী বছরে বেতন বৃদ্ধির অগ্রিম আবেদনের ক্ষেত্রেও এগিয়ে পুরুষরা। তাদের তুলনায় ২৬ শতাংশ কম নারী এ ধরনের অনুরোধ করেন।
আগের বছরের আবেদনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে বেতন বাড়ে মোট কর্মীর ৭৩ শতাংশের।
যুক্তরাজ্যে ২০২১ সালে বেতনের জেন্ডারভিত্তিক ব্যবধান ছিল মাত্র ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। এক বছর আগে এ হার ছিল ৭ শতাংশ।
বর্তমান প্রতিষ্ঠানে বেতনবৈষম্যে ভুগছেন বলে মনে করেন অর্ধেকের বেশি নারী কর্মী। পুরুষদের ক্ষেত্রে এ হার ৪৪ শতাংশ।
বেতন বৃদ্ধি ও পদোন্নতিতে প্রতিষ্ঠান অস্বচ্ছ উপায় অবলম্বন করে বলে মনে করেন অর্ধেকের বেশি নারী। পুরুষের ক্ষেত্রে এ হার ৪২ শতাংশ।