মধ্যপ্রাচ্য ওলট-পালট করে দেয়া আরব বসন্তের শুরুটা হয়েছিল তিউনিসিয়ায়। দুর্নিবার এক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পতন ঘটেছিল ২৩ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতা আকড়ে রাখা প্রেসিডেন্ট বেন আলীর।
কিন্তু সেই ঘটনার দশ বছর পর আবারও অতীতের পুনরাবৃত্তি দেখতে পাচ্ছে তিউনিসিয়ার মানুষ। এবার তাদের কাঠগড়ায় দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধেও।
রোববার আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদিন গণতান্ত্রিক শাসন ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশটির পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ করেছে কয়েক হাজার মানুষ। তবে প্রেসিডেন্ট সাইদের নির্দেশে বিক্ষোভকারীদের ঘিরে রেখেছিল দেশটির পুলিশ বাহিনী।
এ সময় পুলিশি ব্যারিকেডের ভেতরে আন্দোলনকারীরা সাইদের ক্ষমতার অবসান চেয়ে নানা ধরনের শ্লোগান দেয়। পুলিশি রাষ্ট্রের অবসান দাবি করে তারা।
বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে জাওহের বেন বারেক নামে একজন সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘জুলাইয়ের ২৫ তারিখ থেকে আমরা একনায়কতন্ত্রের মধ্যে আছি। এই অবস্থা না কাটা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
গত ২৫ জুলাই করোনার মধ্যে সরকারি অব্যবস্থাপনার অভিযোগে এক আকস্মিক বিক্ষোভের পর প্রেসিডেন্ট সাইদ দেশটির নির্বাচিত পার্লামেন্ট ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করে প্রধানমন্ত্রী হিশাম মাচিচিকে বরখাস্ত করেন। শুধু তাই নয়, দেশের নির্বাহী ক্ষমতা নিজের হাতে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে এক আদেশও জারি করেন।
পরে গত ২৩ আগস্ট রাষ্ট্রের নিরাপত্তার কথা বলে পরবর্তী আদেশ দেয়া না পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিত রাখার আদেশ দেন সাইদ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ সেপ্টেম্বর জারি করা এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধানের কিছু অংশ স্থগিত করে নিজের ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে নেন তিনি।
২৯ সেপ্টেম্বর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভূতত্ত্ববিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নাজলা বুউদেন রমাদানকে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট সাইদ। তবে, সব ক্ষমতা নিজের কাছে রেখে দেয়াও নতুন মন্ত্রী পরিষদ এখন সাইদের হাতের পুতুল।
এ অবস্থাটিরই অবসান চাইছে তিউনিসিয়ার মানুষ। এক দশক আগে তারা একই আন্দোলন করে সফল হয়েছিলেন।