ইথিওপিয়ায় কমপক্ষে ১৮৪ বেসামরিক নাগরিককে টাইগ্রে বিদ্রোহীরা হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
উত্তরাঞ্চলের আমহারা অঞ্চলে চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়।
শনিবার সংস্থাটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের একটি অনুসন্ধানী দল আমহারায় পরিদর্শন করে ১২৮ স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে। তাদের বর্ণনায় উঠে আসে এ তথ্য।
ওই প্রতিবেদনের বরাতে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সরকারের কাছে তথ্য পাচার ও সরকারি বাহিনীকে সহায়তার অভিযোগে এসব বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ)। আমহারার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসব বেসামরিক নাগরিককে তুলে আনা হয়েছিল। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি মানসিক অসুস্থ ব্যক্তিরাও।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে বেসামরিক নাগরিকরাও। সংঘাতময় টাইগ্রে অঞ্চল ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করা অনেক বাসিন্দাকে হত্যা করছে স্থানীয় তরুণরা। বিদ্রোহীদের সহায়তার অভিযোগে এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে।
ইথিওপিয়ায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ডেনিয়েল বেলেকে বলেন, ‘আমহারা অঞ্চলের সাউথ গন্ডার ও নর্থ ওলো এলাকায় হামলা ও নিপীড়ন দুই পক্ষই চালাচ্ছে। বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তায় দ্রুত সংঘাত বন্ধ করতে হবে।’
হত্যাযজ্ঞের নেপথ্যে
আবি আহমেদ ২০১৮ সালে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর রাজনৈতিক সংস্কারের নামে টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের সদস্যদের রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেয়া শুরু করেন। এটি টিপিএলএফ নেতৃত্বকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আবি আহমেদের আঞ্চলিক সংসদীয় নির্বাচনের বিরোধিতা করে টিপিএলএফ। জবাবে কয়েক সপ্তাহ মধ্যেই টাইগ্রে অঞ্চলের জন্য অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে দেয় টিপিএলএফ এর এক সময়ের ঘনিষ্ঠ আবি।
এর দুই মাসের মাথায় গত নভেম্বরে সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানোর অভিযোগে টাইগ্রে অঞ্চলে সেনা পাঠায় ২০১৯ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী আবি আহমেদ। প্রায় আট মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর চলতি বছরের জুনে টাইগ্রে পুনর্দখলে নেন টিপিএলএফ সদস্যরা।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পর্যবেক্ষণে সংঘর্ষে ইতোমধ্যে বহু মানুষ গৃহহীন হয়েছে। নারীদের নিরাপত্তা একেবারেই নেই। প্রাণহানি বেশিরভাগ সাধারণ নাগরিকের।