বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বায়ুদূষণে নাকাল দিল্লি, সরকারের উদাসীনতায় ক্ষিপ্ত প্রধান বিচারপতি

  •    
  • ১৩ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:১৬

প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীকে বলেন, ‘আপনি যা বলছেন তাতে মনে হচ্ছে, এর জন্য শুধু কৃষকই দায়ী? এই সরকার অথবা ওই সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং আপনাদের বলা উচিত বায়ুদূষণের জন্য আংশিক দায়ী কৃষকদের ফসলের অবশিষ্ট অংশ পোড়ানো। বাকি দূষণের কী হবে? আপনি কি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন?’

বায়ুদূষণ নিয়ে একটি মামলার শুনানিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলে বায়ুদূষণের ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারকে প্রশ্ন করেছেন, ‘এভাবেই চলতে থাকলে আমরা বাঁচব কীভাবে?’

শনিবার দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সরকারকে দুই দিনের লকডাউনের মতো অন্যান্য পদক্ষেপ বিবেচনা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

শনিবার সকালে দিল্লিতে বাতাসের গুণমান পৌঁছায় ৫০০ স্কোরে, যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ দূষণের মাত্রা। এই মাত্রাকে বলা হয়, বসবাস অযোগ্য।

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘দিল্লিতে জরুরি অবস্থা চলছে। দু-তিন দিনের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।’

আদালত বলে, প্রতিবার বায়ুদূষণের জন্য কৃষকদের দোষারোপ করা এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রকে ১৫ নভেম্বর আদালতে জরুরি পরিকল্পনা নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘পরিস্থিতি কেমন তা সবাই জানে। এমনকি আমরা বাড়িতে মাস্ক লাগাই। দূষণ মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলুন। খড় পোড়ানোর কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এটা বন্ধ করতে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?’

প্রধান বিচারপতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশের পর পাঞ্জাবের ওপর দোষ ঠেলে দিয়ে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, ‘আমরা ফসলের অবশিষ্ট অংশ পোড়ানো আটকাতে পদক্ষেপ নিচ্ছি। কিন্তু বিগত পাঁচ-ছয় দিন ধরে যে পরিমাণ দূষণ দেখছি, তা পাঞ্জাবে ক্ষেতগুলোতে ফসলের অবশিষ্ট অংশ জ্বালানোর কারণেই হয়েছে। রাজ্য সরকারেরও কঠোর হওয়া উচিত। একাধিক জায়গায় মাইলের পর মাইলজুড়ে ক্ষেত পরিষ্কার করতে ফসলের গোড়া পোড়ানো হচ্ছে।’

এ কথা শুনে প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীকে বলেন, ‘আপনি যা বলছেন তাতে মনে হচ্ছে, এর জন্য শুধু কৃষকই দায়ী? এই সরকার অথবা ওই সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং আপনাদের বলা উচিত বায়ুদূষণের জন্য আংশিক দায়ী কৃষকদের ফসলের অবশিষ্ট অংশ পোড়ানো। বাকি দূষণের কী হবে? আপনি কি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন?’

আদালতের ধমকে কেন্দ্রের তরফে হাজির সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘আমরা শুধু কৃষকদের দোষ দিচ্ছি না, আমরা কখনওই এই কথা বলিনি।’

বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘প্রশ্ন কৃষকের নয়। প্রশ্ন হলো দূষণ রোধে পরিকল্পনাগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা নিয়ে। কৃষকরা ক্ষতিপূরণ বা ভর্তুকি না পেলে, কোনো ধরনের পরিবর্তন না হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি।’

আদালত বলেছে যে, খড় ছাড়াও যানবাহন, ধুলোর সমস্যাও রয়েছে, যা দেখা দরকার। নির্দিষ্ট ধরনের যানবাহন নিষিদ্ধ করার মতো পদক্ষেপ নেয়ার কথাও বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘দূষণের কিছু শতাংশ অবদান খড় পোড়ানোর কারণে। বাকিটা পটকা, শিল্প, ধুলা ইত্যাদি থেকে। অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রয়োজন, প্রয়োজনে ২ দিনের লকডাউন বা অন্য কিছুর কথা ভাবুন। নইলে মানুষ বাঁচবে কী করে? রাজনীতি ও সরকারের ঊর্ধ্বে কাজ করতে হবে।’

সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘কেন কেন্দ্র কৃষকদের কাছ থেকে খড় নিয়ে শিল্পে দিচ্ছে না?’

এ বিভাগের আরো খবর