সেনাশাসিত মিয়ানমারে বন্দি যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক ড্যানি ফেনস্টারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে এসব মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন হতে পারে তার।
ফেনস্টারের আইনজীবীদের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনমত উসকে দেয়া, বেআইনি সম্পৃক্ততা ও অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের কয়েকটি অভিযোগে আগে থেকেই বিচারাধীন ৩৭ বছর বয়সী এ সংবাদকর্মী।
তবে সর্বোচ্চ শাস্তি বিবেচনায় নতুন দুটি মামলাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুতর। এই দুই মামলায় ফেনস্টারের বিচার শুরু হবে আগামী মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর)। কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা বলা হয়নি।
ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমারের ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক ছিলেন ফেনস্টার। ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চলতি বছরের মে মাসে আটক হন তিনি।
ছয় মাস ধরে কারাবন্দি ফেনস্টার সম্পর্কে তার আইনজীবী থান জাও অং বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘তিনি অনেক শুকিয়ে গেছেন।’
গত ১ ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশটিতে আটক করা হয়েছে হাজারো বিক্ষোভকারীকে। তাদের মধ্যে আছেন অর্ধশতাধিক স্থানীয় সংবাদকর্মী।
দেশটির সংবাদমাধ্যমও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে সেনাবাহিনী।
স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, বিক্ষোভ দমনে প্রায় ১২শ মানুষকে হত্যা করেছে সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার রয়েছে সাড়ে সাত হাজার মানুষ।
গত মাসে সামরিক শাসকদল কয়েক শ রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয়ার ঘোষণা দিলেও তাদের মধ্যে ছিলেন না ফেনস্টার।
ফেনস্টারকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এতে সাড়া দেয়নি নেইপিদো।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ড্যানি ফেনস্টারকে যে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে, তা সারা বিশ্বের সামনে স্পষ্ট। তাকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দেয়ার মাধ্যমে মিয়ানমারের শাসকদলের এই বর্বরতায় ইতি টানা উচিত।
‘তাকে এভাবে আটকে রাখা অগ্রহণযোগ্য। সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়।’
সংবাদভিত্তিক ইংরেজি ম্যাগাজিন ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করতে প্রায় এক বছর ধরে ইয়াঙ্গুনে অবস্থান করছিলেন ড্যানি ফেনস্টার। পত্রিকাটি সেনা অভ্যুত্থানের বিষয়ে বিস্তৃত পরিসরে খবর সংগ্রহ ও প্রতিবেদন প্রকাশ করছিল।
পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেশের উদ্দেশে রওনা দেয়ার সময় আটক হন ফেনস্টার। ইয়াঙ্গুনের কুখ্যাত ইনসেইন কারাগারে বন্দি তিনি।