বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাকিস্তানে তালেবানের সঙ্গে ১ মাসের ‘পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতি’তে সরকার

  •    
  • ৯ নভেম্বর, ২০২১ ১২:৪৯

অতীতে কয়েক দফায় পাকিস্তানি তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে ইসলামাবাদ। তবে গত আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্তানি তালেবানের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করে ইসলামাবাদ। আফগান তালেবান নেতাদের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান সরকার ও টিটিপির প্রতিনিধিরা দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় কয়েক দফা বৈঠক করেছে।

পাকিস্তানে স্থানীয় তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে এক মাসের পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে দেশটির সরকার। উভয়পক্ষ চাইলে চার সপ্তাহের এ অস্ত্রবিরতির মেয়াদ পরবর্তীতে বাড়তে পারে। দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর এ অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে স্থায়ী শান্তিচুক্তির পথ উন্মুক্ত হলো বলে মনে করা হচ্ছে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় মঙ্গলবার থেকে অস্ত্রবিরতিটি কার্যকর হবে। এটি বলবৎ থাকবে অন্তত আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

পাকিস্তানি তালেবান হিসেবে পরিচিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন। প্রতিবেশী আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা তালেবানের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় পাকিস্তানি তালেবান।

কট্টর ইসলামপন্থি ও উগ্রবাদী রাজনৈতিক সংগঠন তালেবানের জন্ম নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানে। সম্প্রতি পশ্চিমা সমর্থিত বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। ২০ বছরের ব্যবধানে শাসনব্যবস্থা দখলের পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ২২ কোটি মানুষের ওপর শরিয়াহ আইনের নিজস্ব কঠোর সংস্করণ আরোপ করেছে আফগান তালেবান।

চলতি বছর আফগানিস্তানে দ্বিতীয় দফায় তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠা করার পর আগের চেয়েও সক্রিয় হয়ে ওঠে প্রতিবেশী পাকিস্তানে তৎপর টিটিপি।

অতীতে কয়েক দফায় পাকিস্তানি তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে ইসলামাবাদ। তবে গত আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্তানি তালেবানের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করে ইসলামাবাদ।

আফগান তালেবান নেতাদের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান সরকার ও টিটিপির প্রতিনিধিরা দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় কয়েক দফা বৈঠক করেছে।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার ও টিটিপি পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতি কার্যকরের সিদ্ধান্তে সম্মত হয়েছে। আলোচনার অগ্রগতি হলে অস্ত্রবিরতির সময় বাড়তে পারে।’

তিনি জানান, পাকিস্তানের সংবিধানের আওতায় অস্ত্রবিরতির চুক্তিটি হয়েছে। চুক্তির কারণে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় অখণ্ডতায় কোনো আঘাত যেন না আসে, তা নিশ্চিত করা হবে।

বোমা ও আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে বছরের পর বছর হাজারো মানুষকে হত্যা করেছে টিটিপি। ছাড় পায়নি বেসামরিক মানুষ থেকে শুরু করে সেনা কর্মকর্তারাও। তবে মালালা ইউসুফজাই হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সবচেয়ে আলোচিত গোষ্ঠীটি।

২০১২ সালে টিটিপির হামলায় গুরুতর আহত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গণে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন স্কুলপড়ুয়া কিশোরী ইউসুফজাই। বেঁচে ফেরার পর নারীশিক্ষায় অবদানের জন্য পরবর্তীতে শান্তিতে নোবেলও পেয়েছেন তিনি।

২০১৪ সালে পাকিস্তানের আফগান সীমান্তবর্তী শহর পেশোয়ারের সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে হামলা চালিয়েছিল টিটিপি। ওই হামলায় প্রাণ যায় ১৩২ শিশুসহ দেড় শ মানুষের।

সবশেষ গত শনিবারও উত্তর ওয়াজিরিস্তানে আদিবাসী অধ্যুষিত একটি জেলায় বোমা হামলা চালিয়ে চার সেনাকে হত্যার ঘটনায় দায় স্বীকার করে টিটিপি। দুইদিন আগে গোষ্ঠীটির দুই সদস্যকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে চারজনকে হত্যার কথা জানায় তারা।

এমন পরিস্থিতিতে পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতির জন্য টিটিপি কারাগারে বন্দি সদস্যদের মুক্তির শর্ত বেঁধে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় নাম রয়েছে টিটিপির।

চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানের একটি জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের (টিএলপি) নাম নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে প্রত্যাহার করে ইসলামাবাদ। এর আগে বিভিন্ন কারাগার থেকে মুক্তি পায় গোষ্ঠীটির কয়েক শ সদস্য।

এ বিভাগের আরো খবর