স্থল, জল ও আকাশপথে বিশাল সামরিক মহড়া চালাচ্ছে ইরান। ওমান সাগরে তেলের ট্যাংকার জব্দ করা নিয়ে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী মুখোমুখি হওয়ার পরই এ মহড়া শুরু করে তেহরান।
স্থানীয় সময় রোববার সকালে শুরু হওয়া এ মহড়ায় সেনা সদস্য, নৌযান, সাঁজোয়া যান, মানববাহী ও মানববিহীন উড়োযান, মিসাইল ও রাডার ব্যবস্থার প্রদর্শনী শুরু হয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আত্মরক্ষামূলক ও আগ্রাসী দুইদিক থেকেই নিজস্ব সক্ষমতার পরীক্ষা চালাচ্ছে ইরান।
ইরানের সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ আব্দুলরহিম মৌসাবি দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলকে জানান, হরমুজ প্রণালী ও ওমান সাগরের পূর্বে আর ভারত মহাসাগরের উত্তরে ১০ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে চলছে এ মহড়া।
স্থলভূমিতে মহড়া চলছে সিস্তান, বেলুচিস্তান ও হরমুজগান প্রদেশ আর মাকরান উপকূলে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনা, ইসরায়েলের হুমকি আর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিবেশী রাষ্ট্র আজারবাইজানের সঙ্গে মতানৈক্যের কারণে গত কয়েক মাসে কয়েকটি বড় বড় সামরিক মহড়া চালিয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী।
এদিকে ভিয়েতনামের পতাকাবাহী ট্যাংকার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা জাহির অব্যাহত রেখেছে ইরান। গত বুধবার দেশটি দাবি করেছিল যে ইরানের তেলবাহী একটি জাহাজ ‘চুরি করার’ চেষ্টা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাহাজটির গন্তব্য কোথায় ছিল, তা জানা যায়নি।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর রাজনৈতিক উপপ্রধান ইয়াদুল্লাহ জাভানির দাবি, ইরানের তেল বিক্রি বন্ধ ও পরমাণু চুক্তি বাতিল-পরবর্তী একতরফা নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের চেষ্টা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমেরিকানরা হাতেনাতে ধরা পড়েছে। কারণ আমাদের নৌবাহিনী আকাশপথে ট্যাংকারটির ওপর নজর রাখছিল। তাই যুক্তরাষ্ট্র যখন আমাদের তেল চুরির চেষ্টা করল, অনেক দূর থেকেই জাহাজটি ইরানের জলসীমায় থেকেই গন্তব্য বদলে ফেলেছিল।’
চলতি সপ্তাহে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ঘটনাটির নাটকীয় ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ২৫ অক্টোবরের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানের সেনারা একটি জাহাজে উঠছেন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি জাহাজ ও হেলিকপ্টারকে সতর্ক করতেও দেখা যায় তাদের। এরপর তারা পাহারা দিয়ে ট্যাংকারটি নিয়ে যান।
সোদিজ নামক ট্যাংকারটির ক্রুরা বর্তমানে ইরানের হেফাজতে আছে এবং তাদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভিয়েতনাম।