দীপাবলিতে বাজির খেলায় অঘটন ঠেকাতে বিশেষ সতর্কতা দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলে এমনভাবে উৎসব উদযাপন করা যাবে না বলে আগেই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তারপরও আলোর উৎসবে পৈশাচিক এক ঘটনা হইচই ফেলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
আতশবাজির বিস্ফোরণে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর শহরে একটি কুকুরের পা উড়ে গেছে, ঝলসে গেছে লেজ। মৃত্যুর মুখোমুখি এই প্রাণীকে বাঁচাতে এখন মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন পশুপ্রেমীরা। এরই মধ্যে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। ঘটনার তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জোরালো দাবি উঠেছে।
যন্ত্রণাকাতর কুকুরটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছে ‘স্ট্রিট পজ’ নামে একটি পশুপ্রেমী সংগঠন।
সংগঠনটির কর্মকর্তা কমলজিৎ সিং বলেন, ‘সম্ভবত চার দিন আগে খরিদা গুরদুয়ারের সামনে কুকুরটির সঙ্গে বর্বরতা হয়েছে। পুরুষ কুকুরটির বাঁ পা পুরোপুরি উড়ে গেছে। আর লেজের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। কুকুরটির বাম চোখের নিচে গভীর ক্ষত হয়েছে। মারাত্মক জখম অবস্থায় কুকুরটিকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে আমাদের খবর দেন কিছু যুবক। কালীপূজার দিন আমরা ওকে খুঁজে পাই।’
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার ওষুধ দিলেও পশু চিকিৎসকদের মতামত ছিল অস্ত্রোপচার ছাড়া কুকুরটিকে বাঁচানো সম্ভব নয়। এ জন্য শুক্রবারেই খড়গপুরের নামী চিকিৎসক অসীম দে অস্ত্রোপচার করেছেন।
পশু চিকিৎসক অসীম দে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, শক্তিশালী বাজিতে উড়ে গেছে পায়ের অংশটি। যেভাবে হাড় আলাদা হয়েছে, শিরা-উপশিরা-টিস্যুর ক্ষতি হয়েছে, তা বিস্ফোরণ ছাড়া সম্ভব নয়। কুকুরটির শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। রোববার থেকে অ্যান্টিবায়োটিক চলবে, ওর বেঁচে থাকার বিষয়ে এখন আশা করা যায়।’
কারা এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি। তবে স্থানীয়দের ধারণা, পথকুকুরটি ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় কেউ পায়ের সঙ্গে আতশবাজি বেঁধে দিয়েছিল। কুকুরটি পালানোর সুযোগ পায়নি বলেই ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।
স্থানীয় পশুপ্রেমীরা দাবি করেন, যারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
ঘটনাটি নিয়ে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করেছে। তবে মামলা হয়নি।
এর আগে কেরালায় আনারসের মধ্যে বোমা ঢুকিয়ে তা হাতির মুখে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছিল স্থানীয়রা। মেদিনীপুরের সাম্প্রতিক এ ঘটনা লজ্জায় ফেলেছে পুরো রাজ্যকে।