উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হওয়ায় ধর্ম তুলে বিদ্রূপ করা হয়েছিল মুর্শিদাবাদের শিক্ষার্থী রুমানা সুলতানাকে। সেই তিনি ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে ১ হাজার ৫৭তম হয়েছেন সর্বভারতীয় মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। মূল্যায়নের ভিত্তিতে মুর্শিদাবাদের কান্দি মনীন্দ্র চন্দ্র গার্লস স্কুলের ছাত্রী রুমানা সুলতানাকে প্রথম করা হয়। এ জন্য তার ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের পাশাপাশি রাজনীতির অঙ্ক খোঁজা হয়। শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে রুমানার কৃতিত্বকে ছোট করে তাকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করেন অনেকে।
রুমানার সাফল্য নিয়ে বলতে গিয়ে বোর্ড সভাপতি ড. মহুয়া দাস বলেন, ‘এবার প্রথম হয়েছেন একজন মুসলিম ছাত্রী, মুসলিম কন্যা, মুসলিম লেডি।’
অথচ এই রুমানা ২০১৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৮৬ নম্বর পেয়ে পঞ্চম স্থান অধিকার করে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন নিজের যোগ্যতায়।
তবে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম নির্বাচিত হওয়ায় বিতর্কের ঝড় ওঠে। নাগরিক সমাজের প্রশ্ন, সনাতন ধর্মের কেউ প্রথম হলে কি এভাবে বলা হতো?
স্বজনরা বলছেন, রুমানা সুলতানার মেধা নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করেছেন, ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্টে (এনইইটি) সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে তাদের যোগ্য জবাব দিয়েছেন।
মুর্শিদাবাদের কান্দিপুর এলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের হোটেলপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুমানা। বাবা রবিউল আলম ভরতপুর থানার অচলা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক। মা সুলতানা পারভীনও একজন স্কুল শিক্ষিকা। বাবা-মা শিক্ষক হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে রুমানার জ্ঞানার্জনের পরিবেশ ছিল।
রুমানা নিজেও পড়াশুনা করতে ভালোবাসেন। শুধু পরীক্ষায় নম্বর তোলার জন্য নয়, জ্ঞান অর্জনের জন্য তিনি ভালোবেসেই বই পড়েন।
এনইইটি পরীক্ষার ফলাফলে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছেন রুমানা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর রুমানা সুলতানা জানিয়েছেন, দিল্লির এইমসে ডাক্তারি পড়ে স্বনামধন্য চিকিৎসক হতে চান তিনি।