পশ্চিমবঙ্গের চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপিকে বিপুল ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এ জয়কে ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষের জয় বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার এক টুইট বার্তায় মমতা বলেন, ‘এটা মানুষের জয়। এই জয়, অপপ্রচার আর ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে পশ্চিমবাংলার মানুষ যে উন্নয়ন আর একতায় বিশ্বাসী তার জয়। মানুষের এই আশীর্বাদে আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, পশ্চিমবঙ্গকে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাব।’
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জেতা দিনহাটা ও শান্তিপুর কেন্দ্র দুটি ছয় মাসের ব্যবধানে উপনির্বাচনের ভোটে বিজেপির থেকে জিতে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
মাত্র ছয় মাস আগে জেতা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ভোটের ফলাফলের করুণ চিত্রে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘কেন এমন হলো, সেটি আমাদের বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে।’
দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীর থেকে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ।
দিনহাটা কেন্দ্রে বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ৫৭ ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামানিকের কাছে হেরে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী উদয়ন গুহ। সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক সাংসদ পদ ধরে রেখে বিধানসভা পদে ইস্তফা দিলে কেন্দ্রটিতে উপনির্বাচন হয়।
মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে উপনির্বাচনের ভোটে বিজেপিকে ভোট গণনার শুরু থেকেই বিপুল ভোটের ব্যবধানে পেছনে ফেলে দেন তৃণমূল প্রার্থী। প্রত্যেকটি রাউন্ডেই ভোট গণনায় উদয়ন গুহর ভোটের ব্যবধান বিজেপির প্রার্থী থেকে বাড়তে থাকে।
খড়দহে জয়লাভ করেছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি ৯৩ হাজার ৮৩২ ভোটের ব্যবধানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে দিয়েছেন।
খড়দহ কেন্দ্রের তৃণমূলের বিজয়ী প্রার্থী কাজল সিনহার ভোটের ফল প্রকাশের আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। এখানে তৃণমূলের প্রার্থী কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে কৃষি মন্ত্রী হয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভবানীপুরের বিধায়ক পদে ইস্তফা দেন শোভনদেব।
সংবিধানের নিয়ম মেনে কৃষিমন্ত্রীর পদ ধরে রাখার জন্য তিনি খড়দহ উপনির্বাচনে বিধায়ক পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন।
গোসাবায় তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫১ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে তৃণমূল বিধায়কের মৃত্যু হলে কেন্দ্রটি বিধায়ক শূন্য হয়েছিল।
শান্তিপুরের তৃণমূল প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী ৬৩ হাজার ৮৯২ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার এই কেন্দ্রের বিধায়ক পদে ইস্তফা দিলে কেন্দ্রটি বিধায়ক শূন্য হয়।
শনিবার দিনহাটা, শান্তিপুর, গোসাবা, খড়দহ এই চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ভোট হয় । মঙ্গলবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভারতীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনা শুরু হলে দেখা যায় প্রত্যাশা মতোই শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধীদের থেকে প্রত্যেকটা রাউন্ডেই এগিয়ে যেতে থাকে সবকটি কেন্দ্রে।