আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে দেশটির সর্ববৃহৎ সামরিক হাসপাতালে কমপক্ষে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ হয়েছে। এর পর থেকেই এলাকাটি থেকে ব্যাপক গোলাগুলির আওয়াজ ভেসে আসছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও তালেবান কর্মকর্তারা।
হামলায় বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হলেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক খবরে ১৯ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে।
শাসক দল তালেবাননিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কারি সাইদ খোস্তি জানান, সরদার মোহাম্মদ দাউদ খান হাসপাতালের প্রবেশপথে মঙ্গলবার দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালটি ৪০০ শয্যার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে তিনি লেখেন, ‘এলাকাটিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন আছে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর মেলেনি।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী।
তালেবান শাসক দলের উপ-মুখপাত্র বিলাল করিমির বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম বিস্ফোরণটি হাসপাতালের প্রবেশপথে এবং দ্বিতীয়টি হাসপাতালের কাছাকাছি একটি এলাকায় হয়েছে।
সরদার মোহাম্মদ দাউদ খান হাসপাতালে মঙ্গলবারের হামলার পরের পরিস্থিতি। ছবি: টোলো নিউজ
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে এলাকাবাসীর পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেছে, কাবুলের কেন্দ্রে সাবেক কূটনৈতিক এলাকা ওয়াজির আকবর খানের নিকটবর্তী একটি এলাকার আকাশে কালো ধোঁয়া কুণ্ডুলী পাকিয়ে উঠছে।
হাসপাতাল থেকে কোনো রকমে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বাঁচা এক স্বাস্থ্যকর্মী জানিয়েছেন, প্রথমে তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন তিনি। কয়েক মিনিট পরই শুরু হয় গোলাগুলি। প্রায় ১০ মিনিট পর দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি হয়, যা প্রথম বিস্ফোরণের চেয়েও শক্তিশালী ছিল।
বিস্ফোরণ ও গোলাগুলি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে নাকি মূল ভবনের ভেতরে হয়েছে, তা জানাতে পারেননি তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বখতার জানিয়েছে, নিষিদ্ধঘোষিত আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিপুলসংখ্যক সদস্য হাসপাতালে প্রবেশ করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াই চলছে তাদের।
হামলাকারীরা যে আইএসেরই সদস্য, তা কীভাবে নিশ্চিত হয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা, সে বিষয়টি অস্পষ্ট।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত টোলো নিউজের এক সংবাদ প্রতিবেদক জানিয়েছেন, হতাহতদের অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
২০১৭ সালে একই হাসপাতালে হামলা চালিয়েছিল আইএস। সে সময় চিকিৎসকের ছদ্মবেশধারী আইএস সদস্যদের হামলায় নিহত হয় কমপক্ষে ৩৮ জন।
চলতি বছরের আগস্টে পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত আফগান সরকারকে উৎখাত করে তালেবান। এরপর থেকেই দেশটিতে মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ধারাবাহিক হামলা জোরদার করেছে আইএস।