আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে দুইজনকে হত্যা করেছে বন্দুকধারীরা, আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বন্দুকধারীরা নিজেদের শাসক দল তালেবানের সদস্য দাবি করে এবং অনুষ্ঠানে গানবাজনা বন্ধে হামলা চালানোর কথা জানায়।
তালেবানের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তিন বন্দুকধারীর মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু তারা কট্টর ইসলামপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সদস্য বলে যে দাবি করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় আফগানিস্তান শাসনের সময় গানবাজনা নিষিদ্ধ করেছিল তালেবান। ২০ বছরের ব্যবধানে গত আগস্টে দ্বিতীয় দফায় দেশের নিয়ন্ত্রণ নিলেও এখনও এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়নি গোষ্ঠীটি।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, নানগড়হর প্রদেশের সুরখ রদ জেলায় গত শুক্রবার হয় এই বিয়ের আয়োজন। চার দম্পতির বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল সেখানে।
স্থানীয় এক তালেবান নেতার কাছ থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলের একটি অংশে গানের রেকর্ড বাজানোর অনুমতি নেয়া হয়েছিল। বিয়ের রীতি পালনে শুধু নারীদের ব্যবহৃত অংশটিতে চলছিল গানবাজনা।
কিন্তু গভীর রাতে বন্দুকধারীরা জোর করে সেখানে প্রবেশ করে এবং লাউডস্পিকার ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রতিবাদ জানালে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানান, ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে।
মতাদর্শ প্রায় একই হলেও তালেবানবিরোধী জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) নানগড়হর প্রদেশে সক্রিয়। অঞ্চলটিতে অতীতের অনেক সহিংস ঘটনার জন্যই অভিযুক্ত আইএস।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট আফগানিস্তান থেকে বিদায় নিলে দেশটির শাসনব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা, ক্ষমতাচ্যুত হয় বেসামরিক সরকার।
ক্ষমতা দখলের পর থেকেই ইসলাম ধর্মে বর্ণিত জীবনবিধানের নিজস্ব কট্টর সংস্করণ জনজীবনে আরোপ করতে শুরু করেছে তালেবান। নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর করা হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ।
ক্ষমতায় আসার পর এক লোকসংগীতশিল্পীকে হত্যা ও বাদ্যযন্ত্র ধ্বংসের অভিযোগ রয়েছে তালেবানের বিরুদ্ধে। অনেক গায়ক ও সুরকার এরই মধ্যে আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়েছেন।